নাগরিক ডেস্ক: অবশেষে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজয়ের কথা স্বীকার করলেন। তিনি ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে তার উত্তরসূরি হিসেবে স্বীকার করে নির্বাচনে পরাজয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
নির্বাচনের সামগ্রিক ফলের ভিত্তিতে গত শনিবার ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে মার্কিন মিডিয়া পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামনে আনার এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) জনতার উদ্দেশে মন্তব্য করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোভিড নিয়ে বলতে গিয়ে সেখানে প্রাসঙ্গিক ক্রমে উত্তরসূরির কথা বলে ফেললেন। যদিও সরাসরি বাইডেনের নাম বলেননি।
নাগরিকদের উদ্দেশে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, তিনি করোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন দিতে চান না। তবে ‘সময়ই বলবে’ যদি জানুয়ারিতে অন্য প্রশাসন এসে তা করে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বক্তব্যের মধ্যেই বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ইঙ্গিত মেলে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আদর্শগতভাবে, আমরা কোনো রকম লকডাউনে যাব না। আমি তো যাবই না। এই প্রশাসনই কোনো লকডাউনে যাবে না … আশা করি, ভবিষ্যতে যা কিছু ঘটুক- কে জানে কোন প্রশাসন হবে, আমার ধারণা, সময়ই বলবে।’
বাইডেনের কাছে নিশ্চিতভাবে পিছিয়ে পড়েও ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে ‘বৈধ বিজয়ী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তাকে বলতে শোনা যায়, যদি বৈধ ভোট গোনা হয়, তা হলে তিনিই জয়ী। রিপাবলিকান পর্যবেক্ষকদের গণনাকেন্দ্রের কাছে ঘেঁষতে দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তার।
বিদায়ী কোনো প্রেসিডেন্ট এমন মন্তব্য আগে কখনো করেননি। কারচুপি করে জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে- এমন কথাও শোনা যায়নি হেরে যাওয়া প্রেসিডেন্টের মুখে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে এমন ধরনের সমস্যা আগে কখনো ঘটেনি বলে জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ভোটের ফলাফল প্রকাশের এক সপ্তাহের বেশি সময় হয়ে গেছে। এখনো কোনো প্রতারণা বা কারচুপির সামান্যতম প্রমাণও মেলেনি। কাজেই, নির্বাচন নিয়ে আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনে বহুল আলোচিত জর্জিয়ায় বাইডেন জয়লাভ করেছেন। শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সে দেশের স্থানীয় সময় বিকেলে এ ফল ঘোষণা করা হয়। এই রাজ্যে বাইডেনের জয়ের ফলে ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বিজয়ী হলেন। এর ফলে মোট ৩০৬ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে নিজের অবস্থান সুসংহত করলেন বাইডেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রাপ্তি ২৩২ ইলেকটোরাল ভোট।
অ্যারিজোনা ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে জো বাইডেন বেশি পপুলার ভোট পাওয়ায় ওই দুই অঙ্গরাজ্যের ২৭ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তার ঝুলিতে জমা পড়ে। ফলে তার ভোটসংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৬। আর নর্থ ক্যারোলিনার ১৫ ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মোট ২৩২ ইলেকটোরাল ভোট ঘরে তুলতে সক্ষম হন।
জানা গেছে, জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিস দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে হস্তান্তর আয়োজন যে ফেডারেল প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে, সেই প্রতিষ্ঠান হস্তান্তরের কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছে। নতুন প্রশাসনের জন্য তহবিল বরাদ্দ এবং সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এখনো এই প্রতিষ্ঠানটি বাইডেনকে নির্বাচিত হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।