নাগরিক রিপোর্ট: শান্তির প্রতিক পায়রা উড়ানোর প্রচলন বাড়ছে বরিশালে। ২ সহ¯্রাধিক কবুতার পালক রয়েছেন নগরীতে। তাদের সংগঠনও রয়েছে ৪ থেকে ৫টি। মাসের পর মাস এদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও হয়। এমন এক প্রতিযোগিতায় সম্প্রতি নতুন রেকর্ড গড়েছেন সৈয়দ রেজাউল কবির নামে এক প্রতিযোগী। তিনি প্রায় ১০ ঘন্টা শাহারাংপুরী প্রজাতির কবুতর উড়িয়ে বিগত ৩ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিজয়ের মাসে এ প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত পায়রা পালককে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
কবুতার উড়ানো এই প্রতিযোগিতার নাম দেয়া হয়েছে হাজী হাই ফ্লাইয়ার টুর্নামেন্ট ২০১৯ ও ২০২০। এর আয়োজক হাজী সোহেল বলেন, ‘মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি কবুতরকে ভালবাসি’- এ শ্লোগানে তারা এগিয়ে যেতে চান। কবুতর উড়ানো প্রতিযোগিতা সাধারনত দীর্ঘ সময়ে চলে। এবার ৬ মাস ব্যাপী এ প্রতিযোগিতা গত মার্চে শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারনে কিছুদিন স্থগিত ছির। সবশেষ গত ৬ নভেম্বর আবারও শুরু করেছেন। ১৬ ডিসেম্বর প্রতিযোগিতা শেষ হবে। এবারের প্রতিযোগিতায় ৩৫জন অংশ নিয়েছেন।
আয়োজক হাজী সোহেল বলেন, এ পর্যন্ত ১৪জন তাদের প্রশিক্ষিত গৃহবাজ পায়রা উড়িয়েছেন। প্রতিযোগীতায় এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন ৩জন। এরা হচ্ছেন সৈয়দ রেজাউল কবির। তিনি গত মঙ্গলবার তার একটি পায়রা ৯ ঘন্টা ৯৮ মিনিট আকাশে উড়েছে। গত ৩ বছরে এতো সময় কোন কবুতর আকাশে ছিল না। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন ফারহান হাসান। তার কবুতর আকাশে উড়েছে ৫ ঘন্টা ৫৭ মিনিট। তৃতীয় অবস্থানে যৌথভাবে মনির হোসেন এবং মো: মোস্তফা। তাদের কবুতর উড়িছে ৪ ঘন্টা ১৩ মিনিট করে। সোহেল বলেন, প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরুস্কার নির্ধারন করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা ও আকর্ষনীয় ট্রফি।
তার তথ্যমতে, প্রতিযোগিতায় গৃহবাজ কবুতর উড়ানো হয়। কেন না দীর্ঘ সময় এগুলো আকাশে উড়তে পারে। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী গৃহবাজ কবুতার হচ্ছে রেহী। তবে ভারতীয় শাহারাংপুরীম পাকিস্তানি টেডিও রয়েছে। তার নিজের প্রায় ৬০ জোড়া কবুতর আছে। সাধারনত হাটেবাজারে ৬০০-১০০০ টাকা কবুতরের জোড়া বিক্রি হয়। তবে উড়ানোর উপর নির্ভর করে যখনই পায়রা হাই ফ্লাই করে তখন এর দাম উঠে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। বরিশালে ৫টি পায়রা সংগঠনে প্রায় ২ হাজার কবুতর পালক রয়েছেন বলে জানান হাজী সোহেল।
কবুতর উড়ানো প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত এগিয়ে থেকে রেকর্ড গড়া নগরীর সৈয়দ রেজাউল কবির বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি কবুতার লালনপালন করেন। পাখির প্রতি তার অনেক মায়া। তার ১০০ জোড়া নানা প্রজাতির কবুতর আছে। এর মধ্যে ফ্লাইং কবুতার ৫০টা এবং প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কবতুর ৪টি। এগুলোর নাম রেখেছেন যথাক্রমে ডায়না, মুহিন, সুন্দরী ও মাইকেল। তিনি জানান, কবুতরগুলোকে নিজের সন্তানের মত প্রতিপালন করেন। তিনি ইয়ং স্টার হাই ফ্লাইয়ার পিজিয়ন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং কবুতর মানব হিসেবে বরিশালে পরিচিত।
হাজী হাই ফ্লাইয়ার টুর্নামেন্ট এর পায়রা উড়ানোর পর্যবেক্ষক ফজল সম্রাট বলেন, দীর্ঘ সময়ের এ প্রতিযোগিতায় অন্যরকম অনুভতি রয়েছে। ৩৫জন প্রতিযোগীর মধ্যে এ লড়াই চলছে। তবে এ অঞ্চলে এবার কবিরের একটি পায়রা নতুন রেকর্ড করে চমক দেখিয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর প্রতিযোগিতায় চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষনা করা হবে।