বরিশালে ‘নিরব এলাকা’ ঘোষনা মানছে না কেউ

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
শব্দ দুষন রোধে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্পটকে ‘নিরব এলাকা’ ঘোষনা কাগজেই রয়ে গেছে। যানবাহনের চালকরা অধিকাংশই জানেন না কিংবা মানেন না নিরব এলাকার নির্দেশনা। পরিবেশ অধিদপ্তর দাবী করেছে নগরীতে স্বাভাবিক মাত্রা অপেক্ষা সর্বোচ্চ ৯১ ডেসিবেল বেশি রয়েছে শব্দের মাত্রা। এর ফলে অসুস্থ্য রোগী, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পথচারীরা শব্দ দুষনের শিকার হচ্ছেন মারাত্নকভাবে। বৃহস্পতিবার শব্দ সচেতনতামুলক এক প্রশিক্ষন কর্মশালায় বরিশাল নগরী শব্দদূষণের মারাত্মক ঝুকিতে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিস্টরা।

গত ৯ সেপ্টেম্বর বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ন ৩টি স্পট যথাক্রমে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও শহীদ অ্যাডভোকেট আবদুর রব সেরনিয়াবাত আইন মহাবিদ্যালয় এলাকাকে নিরব এলাকা ঘোষনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। নিরব এ এলাকায় হর্ন বাজানো বন্ধে প্রচারনা এবং জরিমানাও করে অধিদপ্তরটি। কিন্তু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও নগরীতে নির্দেশনা মানছে না যানবাহনের চালকরা।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই ৩টি স্পট ঘুরে দেখা গেছে, উচ্চ শব্দে থ্রি হুইলার ও মোটরসাইকেলর হর্ন বাজাতে। দুই হাসপাতালের পাশেই এসব যানবাহন ঠাসা। চালকরা অবশ্য এজন্য নগরীতে মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যক অবৈধ যানবাহনকে দায়ী করেছেন। যদিও নগরী শব্দ দুষনের উচ্চ ঝুকির মধ্যে থাকায় এ শিকার হচ্ছে শিশু, রোগী ও শিক্ষার্থীরা।

নগরীতে শব্দ সচেতনতামুলক এক প্রশিক্ষন কর্মশালায় বৃহস্পতিবার বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের ‘নিরব এলাকা’ নগরীর কোথায় কে কে জানেন হাত তোলার আহবান জানানো হলে ২-১জন কেবল হাত তুলেছেন।

বরিশাল জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষন কর্মশালায় অর্ধশত নানা শ্রেনীর চালক অংশগ্রহন করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের নবাগত পরিচালক মো: আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে কর্মশলায় মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: কামরুজ্জামান। তিনি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন- বরিশাল নগরীতে শব্দের সর্বোচ্চ মাত্রা ১৩১ ডেসিবেল এবং সর্বনিম্ন মাত্রা ৫৪ ডেসিবেল। যদিও শব্দের স্বাভাবিক মানমাত্রা ৪০ থেকে ৪৫ ডেসিবেল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শব্দদূষণ ৬০ ডেসিমেল হলে মানুষ সাময়িক বধির এবং ১০০ অতিক্রম করলে পুরোপুরি বধির হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানোর শাস্তি হচ্ছে ১ মাসের কারাদন্ড বা ৫ হাজার টাকা বা উভয় দন্ড।

সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বরিশালের উপ পরিচালক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, যানবহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ণ শব্দদূষনের অন্যতম প্রধান কারন। বরিশালের শতভাগ পরিবহনে এ হর্ণ ব্যবহৃত হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে এসব হর্ণ জব্দ করা হলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না। হাইড্রোলিক হর্ণের মূল্য কম হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আবার সেগুলো পরিবহনে স্থাপন করা হয়। কর্মশালায় বিআরটিএ উপপরিচালক চালকদের জানতে চান কে কে জানেন নগরীর কোথায় নিরব এলাকা। এসময় হাতে গোনা কয়েকজন চালক হাত তুলেন। অংশগ্রহনকারী যানবহন চালকদের হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার না করার অঙ্গীকার করান তিনি।

বরিশাল জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহ জাহান বলেন, সড়কপথে দায়িত্বপালনকারী ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের অনেক সদস্য শব্দদূষনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
চালকেদের পক্ষে নথুল।রাবাদ বাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক ফরিদ হোসেন বামটার্মিনাল থেকে অবৈধ দোকানপাট অপসারনের দাবী জানান।

কর্মশালার প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, শব্দ দুষনে মোটরসাইকেলসহ যানবাহনের হর্ন কতটা ক্ষতির কারন তা পরবর্তী প্রজন্ম এর প্রভাবে উপলব্দি করবে। অসচেতনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে পরিবেশ আইনের আওতায় আনা হবে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো: আবদুল হালিম বলেন, কিভাবে আইন মানাতে হয় তার ইনস্টুমেন্ট পরিবেশের পরিচালকের হাতেই আছে। আপনাদের আগে সচেতন করলাম। শুধু সেবা নয়, দমনও করা হবে।

এব্যপারে বাংলাদেশ রফিকুল আলম বলেন, সেরকম প্রচারই হয়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে শব্দ দুষন নিয়ন্ত্রন করতে হবে। বাধ্যতামুলক। হর্ন এর তীব্র সিস্টেমটাকে পরিবর্তন আনতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *