বিপাকে বরিশালের ১৩ হাজার দোকান কর্মচারী

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: করোনাভাইরাস প্রাদূর্ভাব রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন বরিশাল নগরীর প্রায় ১৩ হাজার দোকান কর্মচারী। দোকান মালিকরা কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন দেয়ার উদ্যেগ নেননি এখনও। ফলে কর্মচারীরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।
কর্মচারীরা জানান, নগরীর বেশীরভাগ দোকান মালিক বিত্তশালী। তারা ইচ্ছে করলেই কর্মচারীদের এ দুর্যোগকালীন সময়ে সহায়তা করতে পারেন। কিন্তু এ দূর্যোগকালীন সময়ে বেতন পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েই সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। তবে অনেক দোকান মালিক বলছেন, দোকান বন্ধ থাকলে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সম্ভব নয়।
জানা গেছে, বরিশাল নগরীর চকবাজার, বাজার রোড, সদর রোড, হাটখোলা, গীর্জামহল্লা, কাটপট্রি, মহসিন মার্কেট ও পদ্মাবতী এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজার দোকান কর্মচারী রয়েছে। আর পুরো বরিশাল নগরী মিলিয়ে দোকান কর্মচারী রয়েছে ১৩ হাজারেরও বেশি। স্বল্প বেতনে পরিবারের ভরণ পোষণ করা এ কর্মচারীরা মালিকদের সহায়তা অর্থাৎ বেতন দিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন।
চকবাজারের একটি বিপনী বিতানের কর্মচারী সঞ্জীব হাওলাদার জানান, চকবাজার, কাটপট্রি, গীর্জা মহল্লা, বাজার রোড ও পদ্মাবতী এলাকার বিতান মালিকরা প্রায় সকলে কোটিপতি। দূর্যোগকালীন সময়ে তাদের কর্মচারীদের ভরনপোষনের দায়িত্ব এসব মালিকরাই নিতে পারেন।
শাহিন মিয়া অপর এক কর্মচারী বলেন, মাস শেষ সপ্তাহে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা খুব সমস্যায় পড়েছি। আমরা নি¤œমধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ায় নিতে পারছি না ত্রান, খেতে পারছি না খাবার। সামর্থবান মালিকদের উচিৎ আমাদের সমস্যা সমাধান করা।
বরিশাল মহানগর দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দত্ত বলেন, ইউনিয়নের কার্ডধারী ৭৫০ জনসহ প্রায় ৪ হাজার দোকান কর্মচারী রয়েছে আমাদের সংগঠনে। তারা চকবাজার, কাটপট্রি, গীর্জামহল্লা, সদর রোড, পদ্মাবতী ও বাজার রোড এলাকার বিপনী বিতান ও দোকানগুলোতে কর্মরত। কর্মচারীরা বর্তমানে বেশ অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাদের বেতন নিয়ে একটু ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কাছে সাহায্যর জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে সংগঠন থেকেও সাহায্য করা হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চকবাজার, পদ্মাবতী, কাটপট্রি ও লাইনরোড ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রহিম বলেন, সকল কর্মচারীদের বেতন প্রদানের জন্য দোকান মালিকদের বলা হচ্ছে। বেতন না পাওয়া নিয়ে এখন পর্যন্ত কর্মচারী ইউনিয়নের কোন অভিযোগ পাইনি।
বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য সচিব ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী বলেন, দোকান কর্মচারীদের নিয়ে আমরাও ভাবছি। তাদের সংখ্যাটা অনেক। আমরা তাদের মধ্যে অসহায় কর্মচারীদের সহযোগিতার চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি বরিশাল জেলা শাখার সাবেক সভাপতি ও মহানগর দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের উপদেষ্টা একে আজাদ বলেন, হাতেগোনা কয়েকজন মালিক তাদের কর্মচারীদের অর্ধেক বেতন দিয়েছেন। বাকিরা কেউ দেয়নি বলে জানি। বিষয়টা নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার।
বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, আমরা দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কর্মচারীদের বেতন প্রদান ও সহায়তা করার বিষয়টি নিশ্চিত করার উদ্যেগ নেব।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *