ফেসবুকে লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেই ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী। টুটুল ভূইয়া নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে আজ বুধবার দুপুর সোয়া একটার দিকে লাইভে এসে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটান স্বামী। পরে হত্যার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

জানা যায়, হত্যকারীর পুরো নাম ওবায়দুল হক টুটুল ভুইয়া। নৃশংসতার শিকার নারীর নাম তাহমিনা আক্তার।

ভিডিওতে দেখা যায়, খুন করার আগে টুটুল বলছিল, একজনের জন্য তার পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। ৮ মাস বয়সে তার মেয়েকে রেখে চলে যায় সে। তার সারা জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে তার স্ত্রীর জন্য এমন দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে করতে এক পর্যায়ে স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন টুটুল। কোপানোর পরপরই নিস্তেজ হয়ে যান ভুক্তভোগী নারী।

এরপরই টুটুল বলতে থাকে, সে এখন শেষ। আপনারা আমার বাবা-মা ও এতিম মেয়েকে দেখে রাখবেন। এই খুনের সঙ্গে তিনি নিজেই জড়িত এবং অন্য কেউ এরসাথে সংশ্লিষ্ট নয়, এমনটা বলতে থাকেন তিনি।

লাইভ ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘সবাই আমাকে ক্ষমা করবেন। আমার বাবা-মা, ভাই-বোন ও অনাথ মেয়েটার খেয়াল করবেন।’

খুন করার লাইভ ভিডিওর পর, একটি মেয়েকে নিয়ে আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেন টুটুল ভূইয়া। সেখানে তার দাবি, তার মেয়ের যখন ৮ মাস বয়স তখন সে (তার স্ত্রী) ছেড়ে চলে যায়। এখন আবার সে ফেরত এসেছে। তার পুরো পরিবার ব্ল্যাকমেইল করে অনেক সমস্যায় ফেলেছে। বাচ্চা মেয়েটাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। এরপর তিনি নিজেও আত্মহত্যার ইঙ্গিত দেয় ওই ভিডিওতে। তবে খুন করার লাইভ ভিডিওটি ঘণ্টাখানেক পর আর টুটুলের প্রোফাইলে পাওয়া যায়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যায় অভিযুক্ত টুটুল ভূইয়ার বাড়ি ফেনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াঈপুর এলাকায়। টুটুল ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করত। সন্তানদের নিয়ে তার স্ত্রী বাড়িতেই থাকত।

টুটুলের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সে ঢাকায় থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী তাহমিনা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তাহমিনার বাড়ি থেকে টাকা চেয়ে মানসিক হয়রানি করা হতো বলে দাবি করেন টুটুল। আটকের পর টুটুল পুলিশের কাছে খুনের কথা স্বীকার করে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, টুটুলের প্রোফাইলে লাইভ ভিডিও তারা পায়নি। তবে, তার পোস্টগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। নিহতের স্বজনরা মামলা করলে এ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ফেনী মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, বারাহীপুর থেকে ওই নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার ও নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এ সময় মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *