এবার করোনা হামলা!

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক: কক্সবাজারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী বিরুদ্ধে পাওনা টাকা আদায়ে ‘করোনা হামলার’ অভিযোগ উঠেছে। পাওনাদারকে ‘আমিও মরব-তুইও মর’ বলে হামলা করেন তিনি। এলাকায় গত দুদিন ধরে মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া চলাচলেরও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে কক্সবাজার শহরতলীর লিংকরোড বাস স্টেশনে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান।
কী হয়েছিল:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর আলম (৩২)। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের পশ্চিম মুকতারকুল গ্রামের বাসিন্দা। তিন দিন আগে সিএনজি চালিত এই ট্যাক্সি ব্যবসায়ীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। সালামত নামে অপর ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি টাকা পাওনা ছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হওয়ায় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করছিলেন না। ঘরে থেকে বেরিয়ে আজ লিংকরোড স্টেশনের দোকানী সালামতকে দেখতে পান জাহাঙ্গীর। এ সময় পাওনা টাকা আদায়ে কৌশল হিসেবে সালামতের ওপর হামলে পড়েন তিনি। তাকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘করোনায় আমিও মরব-তুইও মর।’ এ সময় লিংকরোড স্টেশনে হট্টগোল লেগে যায়। লোকজন ‘করোনা আইয়্যের, করোনা আইয়্যের’ বলে ছোটাছুটি শুরু করেন। এলাকাবাসীর মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ:
সিএনজি চালিত ট্যাক্সি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তিনি লোকজনের সঙ্গে বেপরোয়া আচরণ করেন। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরও আইসোলেশনে না থেকে তিনি রাস্তায় ঘোরাঘুরি করেন। গত দুদিন ধরে লিংকরোড স্টেশন এলাকায় বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেলও চালিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান। তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত জাহাঙ্গীরের বেপরোয়া আচরণের কারণে বিভিন্ন সময় তার সালিশ-বিচার নিয়ে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। তিনি লকডাউন না মেনে হরদম মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করায় স্থানীয়রা বিপাকে পড়েছেন।’
টিপু সুলতান আরও বলেন, ‘করোনা পজিটিভ হওয়ার পর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গত রোববার জাহাঙ্গীরকে নিজ ঘরে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে পাড়াটিও লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু একদিন পরেই জাহাঙ্গীর আলম লকডাউন অমান্য করার কাজ শুরু করে দেয়। সর্বশেষ তার কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য সে এক ব্যবসায়ীর ওপর ‘করোনা হামলা’ চালিয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ উল্লাহ মারুফ বলেন, ‘আমি খবর পেয়েছি। এটা নিশ্চিত করোনায় আক্রান্ত জাহাঙ্গীর লকডাউন অমান্য করে লোকজনের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করছেন। আজ রাতের মধ্যে তাকে রামু আইসোলেশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।’ কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাতে তাকে রামু আইসোলেশন হাসপাতালে নিয়ে যাবেন ইউএনও সাহেব। এ ছাড়া পুলিশও সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *