Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : চুল পড়া সমস্যা নিয়ে জর্জরিত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই। বর্তমানে দেখা যায় অনেক কম বয়সী ছেলে-মেয়েরাই চুল পড়া সমস্যায় ভুগছে।

আমাদের মাথায় প্রায় ১০০,০০০ চুল রয়েছে। যার মধ্যে প্রতিদিন ৫০-১০০টা চুল পরে যাওয়া একেবারে স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এর থেকে বেশি মাত্রায় পরতে শুরু করলেই চিন্তার বিষয়। এক্ষেত্রে যত শিগগিরিই সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে কিন্তু মাথা ফাঁকা হয়ে যেতে সময়ও লাগবে না।
নানা কারণে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া এমন কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে যেগুলো চুল পড়া কমায়।

দই

২ চামচ দইয়ের সঙ্গে ১ চামচ মধু এবং ১ চামচ লেবুর রস নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। যখন দেখবেন প্রতিটি উপাদান ঠিক মতো মিশে গেছে, তখন মিশ্রনটা ভাল করে চুলে লাগিয়ে কম করে ৩০ মিনিট রেখে দিন। সময় হয়ে গেলে চুলটা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এমনটা সপ্তাহে একবার করলেই দেখবেন চুল পড়ার হার কমতে শুরু করেছে।

নারকেল দুধ

এক কাপ নারকেল দুধ নিয়ে ধীরে ধীরে স্কাল্পে লাগান। তারপর একটা টাওয়াল দিয়ে মাথাটা ডাকা দিয়ে কম করে ২০ মিনিট রেখে ভাল করে চুলটা ধুয়ে ফেলুন। এমনটা সপ্তাহে কয়েকবার করলেই দেখবেন চুল পড়া কমতে শুরু করবে। কারণ নারকেল দুধে উপস্থিত ভিটামিন ই, চুলের অন্দরে ময়েসশ্চারাইজারের ঘাটতি দূর করে। ফলে চুল পড়ার হার কমে যায়।

পেঁয়াজের রস

এতে থাকা সালফার হেয়ার ফলিকেলসে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দিয়ে নিমেষে চুল পড়া কমিয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়, পেঁয়াজের রসে রয়েছে বিপুল পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ, যা স্কাল্পে ঘর বেঁধে থাকা জীবাণুদের মেরে ফেলে। ফলে স্কাল্প ইনফেকশনের সঙ্গে সঙ্গে চুল পড়ার অশঙ্কাও হ্রাস পায়।

কীভাবে চুলে লাগাবেন পেঁয়াজের রস? ১ টা পেয়াজ থেকে রস সংগ্রহ করে নিন। তারপর সেই রস সরাসরি মাথায় লাগিয়ে মাসাজ করুন। ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে নিন। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতিতে চুলের পরিচর্যা করলে ফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে।

মেথি

চুল পড়া আটকাতে মেথি দারুন কাজে আসে। আসলে এতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো যখনই দেখবেন চুল পড়ার হার খুব বেড়ে গেছে, তখনই অল্প করে মেথি বীজ নিয়ে এক গ্লাস পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রাখবেন। পরদিন বীজগুলি বেটে নিয়ে একটা পেস্ট বানাবেন। সেই পেস্টটা ভাল করে মাথায় লাগিয়ে ৪০ মিনিট রেখে দিয়ে ধুয়ে নেবেন। টানা একমাস, প্রতিদিন এই মিশ্রনটি মাথায় লাগালে চুল পড়া তো কমবেই, সেই সঙ্গে মাথা ভর্তি চুলের স্বপ্নও পূরণ হবে।

নিম পাতা

এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ চুলের গোড়ায় কোনো ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমায়, তেমনি খুশকির প্রকোপও হ্রাস করে। আর এমন ধরনের রোগের হাত থেকে যখন মুক্তি মেলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই চুল পড়াও কমে যায়।

তাই যখনই দেখবেন বেশি মাত্রায় হেয়ার ফল হচ্ছে, তখনই ১০-১২ টা নিম পাতা নিয়ে জলে ফুটিয়ে নেবেন। তারপর সেই জল দিয়ে ভাল করে চুলটা ধুয়ে নিতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।

তেল মাসাজ

চুল পড়া আটকাতে প্রতিদিন তেল মাসাজ করাটা জরুরি। এমনটা করলে স্কাল্পে রক্ত প্রবাহ খুব বেড়ে যায়। ফলে চুলের গোড়া আরও শক্তপোক্ত হয়। আর একবার চুলের গোড়া মজবুত হয়ে গেলে চুল পরাও স্বাভাবিক ভাবে কমে যায়। এক্ষেত্রে নারকেল তেল, বাদাম তেল, অলিভ অয়েল অথবা আমলার তেল ব্যবহার করতে পারেন।

অ্যালো ভেরা

এতে রয়েছে এমন কিছু এনজাইম, যা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাকে। ফলে চুল পরলেও মাথা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। অ্যালো ভেরার উপকারিতা কিন্তু এখানেই শেষ হয়ে যায় না। এতে উপস্থিত অ্যালকেলাইন প্রপার্টিজ স্কাল্পের পি এইচ লেভেল ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে চুল পরার হার কমে।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে? পরিমাণ মতো অ্যালো ভেরা জেল নিয়ে স্কাস্পে লাগিয়ে ফেলুন। কিছু ঘন্টা অপেক্ষা করে হালকা গরম জলে ভাল করে মাথাটা ধুয়ে নিন। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ৩-৪ বার এই ভাবে অ্যালো বেরা জেল মাথায় লাগলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।

আমলকি

চুল পড়া আটকানোর পাশপাশি চুলের বৃদ্ধিতেও আমলকির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এতে থাকা ভিটামিন সি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে, সেই সঙ্গে স্কাল্পের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়। ফলে চুল পরার প্রবণতা কমে।

প্রসঙ্গত, দেহে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি দেখা দিলে চুল পরা বেড়ে যায়। তাই এই ভিটামনিটির ঘাটতি যেন কখনও না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রথমে ১ চামচ আমলার রসের সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটি ভাল করে চুলে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিয়ে পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *