নাগরিক রিপোর্ট : শিক্ষানবীশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে পাল্টাপাল্টি আল্টিমেটাম দেয়ায় করোনার মধ্যে অচলাবস্থর মুখে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদালয় (শেবাচিম) হাসপাতাল। এক নারী চিকিৎসককে উত্যক্ত্যের অভিযোগে দুই কর্মচারীর বিচারের দাবিতে শনিবার ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অপরদিকে অভিযুক্ত দুই কর্মচারীকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মারধরা করায় তাদের বিচারের দাবীতে পাল্টা আল্টিমেটাম দিয়েছেন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা। গত সপ্তাহে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে উত্যক্ত করার অভিযোগ নিয়ে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা প্রকাশ্যে বিরোধে জড়ান।
ইন্টার্ন চিকিৎকদের দাবী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন এক নারী চিকিৎসককে গত ২৮ জুন রাতে উত্যক্ত করেছে কর্মচারী বাদশা ও দিদারুল ইসলাম। ওই চিকিৎসক ১৫ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন। তবে দুই কর্মচারীর দাবী, তাদের আরেক সহকর্মী বাদশা পাশের ১৮ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন। বাদশাকে দেখতে গিয়ে তারা ভুলে ১৫ নম্বর কক্ষের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেছিলেন। পরে ভুল বুঝতে পারলে নারী চিকিৎসকের কাছে তারা ক্ষমাও চেয়েছেন। ওই ঘটনার জের ধরে গত ২৯ জুন দিদার ও নুরুল ইসলামকে মোটরসাইকেলে তুলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হোষ্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করেন। চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের আলী কবির জানান, নির্যাতনকারী ইন্টাার্ন চিকিৎসদের বিচার না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে নামবেন। এর পাল্টা হিসাবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা শনিবার দুপুরে পরিচালকের কক্ষে গিয়ে নারী চিকিৎসককে উত্যক্তকারী দুই কর্মচারীর বিচার চেয়ে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সজল ও ডা তুলি জানান, ৭২ ঘন্টার মধ্যে বিচার না পেলে তারা ধর্মঘটে যাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছেন।
হাসপাতালের একাধিক সুত্রে জানা গেছে, দুই পক্ষের আল্টিমেটামে উত্তেজনা বিরাজ করছে শেবাচিম হাসপাতালে। করোনা সংকটকালে কোন ধরনের ধর্মঘট কিংবা আন্দোলন হলে হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিস্টরা। তবে দুই পক্ষই তাদের অবস্থান থেকে সড়ে না দাড়ানোর ঘোষনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এব্যপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: বাকির হোসেন জানান, দুই পক্ষই লিখিতভাবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহবান জানানো হয়েছে।
২০২০-০৭-০৫