বাকেরগঞ্জে পিতা-পুত্রকে খুন : ছিনতাই হওয়া ট্রলারসহ ৩জন কেরানীগঞ্জে গ্রেফতার

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা কবাই ইউনিয়নে নির্মমভাবে খুন হওয়া পিতা-পুত্রের তিন ঘাতক ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাাকায় গ্রেফতার হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া ট্রলারটি। রোববার দুপুর ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জের তেলঘাট এলাকায় ৩ ঘাতককে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে নিহত হেলাল উদ্দিন (৫৫) ও তার পুত্র ইয়াসিন হাওলাদারকে (২০) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া গ্রামের বাড়িতে শনিবার রাত ১২টটায় দাফন করা হয়েছে। উপজর্নক্ষম দুই সদস্যকে হারিয়ে হতদরিদ্র এ পরিবারিটি দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
গ্রেফতার হওয়া তিনজন হচ্ছে- বাদল হাওলাদার (৩২), সানি হাওলাদার (১৬) ও শাহিন খান (২২)। তাদের সকলের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল গ্রামে। বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ কেরানীগঞ্জে তিনজন গ্রেফতার হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা খুনের সঙ্গে জড়িত কি-না তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন। কেরানীগঞ্জ থানায় উপস্থিত অ্যাডভোকেট আল আমিন রিজভী জানান, ওই তিনজন ছিনতাই করা ট্রলারটি বিক্রির জন্য কেরানীগঞ্জ গিয়েছিল। ট্রলার ছিনতাইয়ের জন্য তারা পিতা-পুত্রকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে।
নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি জানান, বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় পিতা-পুত্রের লাশ কলারদোয়নিয়ায় নিয়ে আসা হয়। রাত ১২টায় তাদের সম্পন্ন হয়। মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর রাত পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক মানুষ নিহতদের বাড়িতে থেকে জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহন করেন।
হেলাল উদ্দিনের বড়বোন আকলিমা জানান, তার ভাই হেলাল উদ্দিন বর্ষা মৌসুমে ‘চাই’ (মাছ ধরার জন্য বাশের কঞ্চি দিয়ে তৈরী) বিক্রি করে এবং অন্য সময়ে কৃষি কাজ করে সংসার চালাতো। বড় ছেলে ইয়াসিন নিহত হওয়ার পর তার আরও ৪টি সন্তান রয়েছে।
কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাসনাত বলেন, নিহত পিতা-পুত্রের আয়েই পরিবারটি চলতে। তারা খুন হওয়ায় পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়লো।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের পান্ডব নদী সংলগ্ন চরলক্ষীপাশায় ঝোপঝাড়ের মধ্যে ইয়াসিন উদ্দিনের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। পরদিন শনিবার সকাল ৮টার দিকে অদুরে পাওয়া যায় ইয়াসিনের পিতা হেলাল উদ্দিনের লাশ। তার পেটে ধারালো অস্ত্রের জখম ছিল। তারা মাছ ধরার ‘চাই’ বিক্রি করতে ট্রলার নিয়ে কবাই গিয়েছিলেন।
নিহত হেলাল উদ্দিনের ভাই বাদশা হাওলাদার জানান, তিনিসহ তার ভাই হেলাল উদ্দিন ও ভাতিজা ইয়াসিন হাওলাদার গত ২৭ জুন ‘মায়ের পরশ’ নামক একটি ট্রলার ভাড়া নিয়ে কলারদোয়ানিয়া থেকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় গিয়েছিলেন ‘চাই’ বিক্রি করতে। বিভিন্ন হাটে ঘুরে ঘুরে ‘চাই’ বিক্রি করতেন। শুক্রবার সকালে তারা কবাই ইউনিয়নের শতরাজ বাজারে চাই বিক্রি করেছেন। বাদশা হাওলাদার জানান, তিনি শতরাজ হাটে থাকলেও তার ভাই ও ভাতিজা ট্রলারে অন্যত্র রওনা হন। শুক্রবার শেষ বিকালে তাদের মোবাইল ফোনে পাওয়া যাচ্ছিলনা।
শতরাজ হাটের আরেক চাই বিক্রেতা মো. হাসান জানান, শুক্রবার এক ব্যক্তি হেলালউদ্দিন ও তার ছেলে ইয়াসিনের কাছ থেকে ৬০টি চাই ক্রয় করেন। ক্রেতা ওই ৬০টি চাই তার বাড়ি পৌঁছে দিতে বলেন। ট্রলারসহ চাই পৌঁছে দিতে গিয়ে বাবা ও ছেলে খুন হন।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *