নাগরিক ডেস্ক : বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার বাবার পৈতৃক ভিটা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চিথলীয়া গ্রামে। সেখানে এখনো অনেক আত্মীয়-স্বজন বসবাস করছেন। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সস্ত্রীক পৈতৃক ভিটায় বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। ওই সময় এন্ড্রু কিশোর সেখানে একটি ‘প্রার্থনা কুঞ্জ’ করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার কাকাতো ভাই পূর্ণদান বাড়ৈ।
তিনি বলেন, ‘এন্ডু কিশোর আমার কাকাতো ভাই। ৩ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। আমার কাকা ক্ষিতিশ বাড়ৈর কর্মস্থল ছিল রাজশাহীতে। তিনি ওখানে চিকিৎসা পেশায় জড়িত ছিলেন। ওখানেই এন্ডু কিশোরের জন্ম। তবে তার বাবার জন্ম কোটালীপাড়ায়।’
পূর্ণদান বাড়ৈ বলেন, ‘কাকা বরিশালে লেখাপড়া করেছেন। এরপর চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করে রাজশাহীতে কর্মজীবন শুরু করেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে প্রতিবছরই কোটালীপাড়ায় বেড়াতে আসতেন তিনি।’
এন্ডু কিশোরের অপর এক কাকাতো ভাই এলিও বাড়ৈ জানান, পারিবারিক যেকোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন এন্ড্রু কিশোর। গত ৭ মাস আগে তার এক কাকার মৃত্যুতে অনুষ্ঠান করার জন্য অর্থ সহযোগিতা করেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, টানা ১০ মাস ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। তিনি রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাসায় ছিলেন।
এন্ড্রু কিশোরের শৈশব ও কৈশোর রাজশাহীতেই কেটেছে। ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ ছবির ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সংগীতে অসামান্য অবদানে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন খ্যাতনামা এই শিল্পী।
এন্ড্রু কিশোরের জনপ্রিয় গানগুলোর তালিকায় আছে- ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’ ইত্যাদি।