সৈয়দ জুয়েল: ২০১৩ সাল থেকে রিজেন্ট হাসপাতাল সহ অন্যান্য ব্যাবসায় নিবন্ধনহীন ভাবে ব্যাবসা চালিয়ে এসেছে শাহেদ। আবার এই হাসপাতালকেই দেয়া হয়েছে করোনা পরীক্ষার মত স্পর্শকাতর বিষয়ের দায়িত্ব। কখনো মেজর, কর্নেল কখনো প্রধানমন্ত্রীর এ,পি,এস পরিচয়ের তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে না থাকার কথা নয়। পুলিশের তো আরো ভাল করে এ প্রতারককে চেনার কথা। ৩২ মামলা নিয়ে আয়েশে ঘোরাফেরা এ সাহেদ এতই শক্তিশালী ছিল,যে তার স্থুলকার শরীরের ছোট পকেটেই থাকতো প্রশাসনের নীতির বাক্স।
হালের রাজনীতিতে ছবি বানিজ্য এ শাহেদকে একটু বাড়তি সুবিধা দিয়েছে বৈকি। পাতি নেতা, পল্টিবাজরাও আজকাল সরকারের গুরত্বপূর্ণ ব্যাক্তি বর্গের সাথে ছবি তুলে- ফেসবুক থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝর তুলেন। নিজেকে জাহির করার চেস্টা চালান নেতা বনে যাওয়ার। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ ছবি বানিজ্য বা টেবিলের নীচ থেকে ম্যানেজ করা নতুন কোন ঘটনা নয়, অতীতের সরকারের সময়ও আমরা দেখেছি এরকম অনেক শাহেদ। এরকম হাজারো শাহেদরাই মূলতঃ দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভাগ ধ্বংসের জন্য অনেকটা দায়ী,তবে কথা হলো এ শাহেদদের কাছ থেকে সুবিধা নেয় কারা? কারা শাহেদদের অন্ধর মহলের লাল,নীল রংয়ের আড্ডায় গ্লাসের টুং টাং আওয়াজ তুলতেন?
রাজনীতি যদি জনগনের জন্য হয়,তাহলে এর ধারা পরিবর্তন জরুরী। এই পূরানো মরিচা ধরা রাজনীতি বর্তমান আধুনিক বিশ্বে অচল। যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো জনসেবায় নতুন নতুন ধারা যুক্ত করে সেবার মান দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন,সেখানে আমরা কচ্ছপ গতিতে ল্যাংরা ঘোরার মত চলছি। পুরো বিশ্ব এ সব অল্প কিছু টাউট বাটপারের জন্য দেশের ১৮ কোটি লোকদের বাঁকা দৃস্টিতে দেখেন। সংখ্যায় নগন্য এ সব টাউট বাটপারদের দায়ভার পুরো জাতি কেন নিবে?
সরকারী হাসপাতাল সহ প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে যে সেবার নামে বানিজ্য হয়,এর মাঝে কাজ করে বড় এক সিন্ডিকেট। এখানে ডাক্তার,হাসপাতালগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা,কর্মচারীরাও এ অপকর্মে জড়িয়ে পরায়- সাধারন মানুষ সেবা নামের বস্তুকে হারিয়ে ফেলেছেন অনেক আগেই। করোনার এ মহামরিতে যেখানে দূর্নীতিবাজ রাঘব বোয়াল থেকে চুনো পুটিরাও মরে যাচ্ছে,তারপরও শাহেদরা থেমে নেই। মনুষ্যত্ব এতটাই তলানিতে যে করোনার রিপোর্টও মিথ্যা বানাতে বুক এতটুকু কাঁপেনা।
সময় এসেছে এসব শাহেদ তৈরীতে যাদের ভূমিকা ছিল,তাদের এক বড় ঝাঁকুনির। শাহেদ তৈরীর কারিগরদের শুদ্ধি এক ঝাঁকুনি দিলে-শাহেদরা শীতের ঝরাপাতার মত মাটিতে গড়াগড়িতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। দেশের প্রায় প্রতিটি শহরেই এসব শাহেদদের দৌড়াত্বে অতিষ্ট সাধারন নাগরিক। সময় এসেছে শাহেদ নামের বিড়ালদের গলায় এখনি ঘন্টি পরানোর। প্রশ্ন হলো এসব বিড়ালদের গলায় ঘন্টিটা পরাবে কে? জাতি সেই ঘন্টি পরা মহামানব দেখার অপেক্ষায়।