পশ্চিমবঙ্গের প্রজ্ঞা দাস যেভাবে হলো বাংলাদেশের জঙ্গী আয়েশা

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : ছোট থেকেই বেশ চুপচাপ। কারও সঙ্গে বেশি কথা বলত না। আত্মীয় কিংবা প্রতিবেশী সকলের কাছে লাজুক বলেই পরিচিত ছিল মেয়েটা। তবে পাড়ার পূজায় অংশ নিত। প্রত্যেক পুজোয় উপোস সে করবেই। কিন্তু হঠাৎ আসা একটা ফোনেই বদলে গেল পশ্চিমমবঙ্গের প্রজ্ঞার জীবন। হুগলির ধনেখালির কেসবাপুরের বাসিন্দা প্রজ্ঞা হয়ে উঠল আয়েশা জান্নাত মোহনা। আর বাড়ি ফিরে যায়নি প্রজ্ঞা ওরফে আয়েশা।

বাংলাদেশে গ্রেপ্তারের পর আবার মেয়ের খোঁজখবর জানতে পারলেন তার ভারতীয় বাবা-মা।

শুক্রবার ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে ২৫ বছরের প্রজ্ঞা দাস ওরফে আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুল তাসনিমকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গিদমন শাখা। পুলিশ জানিয়েছে, কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন নিও জেএমবির জন্য অনলাইনে সদস্য জোগাড় করত আয়েশা।

শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে সংগঠনটির মহিলা শাখার প্রধান আসমা খাতুন গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই দায়িত্ব বর্তায় আয়েশার কাঁধে। জানা গেছে, হিন্দু ওই তরুণী ২০০৯ সালে জেহাদিদের অনলাইন ফাঁদে পা দিয়েছিল। তার যোগাযোগ গড়ে ওঠে নিও জেএমবির মহিলা শাখার প্রধান আসমা খাতুনের সঙ্গে।

জানা গেছে, নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে নারী সদস্য সংগ্রহ করছিলেন আসমা। তিনি বিভিন্ন জনকে কথিত হিজরতে পাঠিয়েছিলেন জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালাতে বা সংগঠন শক্তি , যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছেন। অনলাইনে তার সঙ্গে নব্য জেএমবির অন্যতম নেতা ইসলাম আল হিন্দী, আবু দুজানা ও আবু মোহাম্মদদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।

অনলাইনে সংযুক্ত হওয়ার পর আসমার কথা মতোই চলতে শুরু করে কলকাতার প্রজ্ঞা ওরফে আয়েশা। ২০১৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ আসে প্রজ্ঞা আয়েশা। তারপর থেকে বেশ কয়েকবার ভারত থেকে আসা যাওয়া করেছে। অবশেষে ২০১৯ সালে পাকাপাকিভাবে বাংলাদেশে থাকতে শুরু করে।

ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ও নাগরিকত্বের পরিচয়পত্রও জোগাড় করে মেয়েটি। সন্দেহ এড়াতে, ওমানের এক বাংলাদেশি নাগরিককে অনলাইনে বিয়ে করে। বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ভুয়া কাগজপত্রও তৈরি করে।

বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পাড়ে কেরানীগঞ্জ থানার একটি মাদ্রাসায়ও সে শিক্ষকতা শুরু করে। শিক্ষকতার আড়ালে অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রমে মহিলাদের নিযুক্ত করত প্রজ্ঞা ওরফে আয়েশা।

প্রজ্ঞাকে জঙ্গি পথে ডেকে আনা আসমার বাড়ি রাজবাড়ীর সদর থানার খান খানাপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বন্দী জীবন’ ও ‘নিখোঁজ আলো’ নাম নিয়ে সক্রিয় ছিলেন আসমা। এ বছরের শুরুর দিকে রাজধানীর কমলাপুর থেকে আসমা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *