নাগরিক রিপোর্ট: প্রাণঘাতী করোনা সংকটের মধ্যে স্বল্পখরচে উন্নতমানের মেডিকেল ভেন্টিলেটর উদ্ভাবন করলেন বরিশালের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। ভেন্টিলেটর উদ্ভাবনকারী ইউনিভার্সিটি অব গেøাবাল ভিলেজে’র (ইউজিভি) ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো: সৈয়দ আলী মোল্লা রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেছেন, শ্বাসতন্ত্র সচল রাখতে যে ‘লজিক’ প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করে প্রোগ্রাম তৈরির পর একটি ভেন্টিলেটর উদ্ভাবন করেছেন তিনি। দেশের ভেন্টিলেটার সংকট কাটাতে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় এটি তৈরি সম্ভাব। এজন্য চলমান মহামারী কাটিয়ে উঠতে সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর ড: সৈয়দ আলী মোল্লা জানান, করোনার মত শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য অপরিহার্য যন্ত্র হচ্ছে মেডিকেল ভেন্টিলেটর। করোনা মহামারীকালীন বিশ্বজুড়ে ভেন্টিলেটর মেশিনের ব্যবহার ও চাহিদা বেড়ে গেছে। দেশে প্রতি ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষের জন্য একটি মাত্র ভেন্টিলেটর মেশিন রয়েছে। এর আমদানী ব্যায়ও অনেক।
তিনি জানান করোনা আক্রান্ত রোগীর যখন শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় তখন ভেন্টিলেটরের সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে রোগীকে শ্বাসতন্ত্রে পরিমিত মাপে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। বিশ্বে করোনা আক্রান্তে শ্বাসতন্ত্রের রোগী দ্রæত বৃদ্ধি পাওয়ায় উন্নত ও অনুন্নত দেশে ভেন্টিলেটরের তীব্র সংকট রয়েছে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশে ভেন্টিলেটরের অভাব কাটাতে ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের সহযোগিতায় তিনি কয়েক মাস ধরে ভেন্টিলেটর তৈরির উদ্যোগ নেন। প্রথমে শ্বাসতন্ত্র চালাবার জন্য যে লজিক প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করে প্রোগ্রাম তৈরি করেন। প্রোগ্রাম শেষে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে ব্যবহার উপযোগী মেডিকেল ভেন্টিলেটর উদ্ভাবন করেন। তার দাবী দেশি-বিদেশি যন্ত্রাংশ ও নিজস্ব প্রোগ্রাম দিয়ে এই যন্ত্রটি পরিচালিত হবে এবং স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের সেবা দিতে পারবে। তিনি জানান, উদ্ভাবিত ভেন্টিলেটর স্বল্প মূল্যে উৎপদন করা যাবে। একটি ভেন্টিলেটর তৈরিতে সর্বোচ্চ ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে ইউজভি এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর চেয়ারম্যান ড. মো: ইমরান চৌধুরী বলেন, প্রফেসর ড. সৈয়দ আলী মোল্লার এই ভেন্টিলেটার উদ্ভাবন ল্যাবরেটরিতে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এটিকে এগিয়ে নিতে ইউজিভি সর্বোচ্চ সহায়তা করছে। প্রাণঘাতী করোনায় দেশের ভেন্টিলেটর সংকট কাটাতে তারা অচিরেই এটি ট্রায়েল পর্যায়ে নিয়ে যেতে সংশ্লিস্ট দপ্তরের অনুমতি নিবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড: মো: আফজাল হোসেন বলেন, করোনা মোকাবেলায় উন্নত দেশের মত বাংলাদেশও প্রস্তুত ছিল না। ধীরে ধীরে ধাক্কা সামলে উঠতে চেস্টা করছে দেশ। ভয় কে জয় করে হাসপাতালগুলোর নানা সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেস্টা চলছে। যেকারনে এখন মৃত্যুর হারও কমেছে।
তিনি বলেন, ইউজিভি’র সহায়তায় এই ভেন্টিলেটার উদ্ভাবন করোনা মোকাবেলায় নতুন আশা দেখা দিয়েছে। করোনা আক্রান্ত দেশের মানুষের জন্য এখন উদ্যাক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি আফজাল হোসেন।