স্বামীগৃহে ফিরে রাতেই লাশ হলো এক গৃহবধু

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় বিকালে পিত্রালয়ে থেকে স্বামীর বাড়িতে ফিরে রাতে লাশ হলো গৃহবধু রেশমা বেগম (২২)। রোববার সকালে স্বামীগৃহ থেকে রেশমার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার আগেই পালিয়ে গেছে স্বামী নয়নসহ ওই পরিবারের অন্যান্যরা। যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী নিহতের পরিবারের। পুলিশ নিহতের শ্বাশুরী ঝর্ণা খানমকে (৫০) আটক করেছে।


নিহত রেশমা গৌরনদীর কটকস্থল গ্রামের আবু ফকিরের মেয়ে। তিন বছর আগে একই উপজেলার নওপাড়া গ্রামের নয়ন সিকদারের (২৮) সঙ্গে সামাজিকভাবে তার বিয়ে হয়েছিল তার। এ দম্পতির দেড় বছর বয়সি একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।


রেশবার বাবা আবু ফকির জানান, বিয়ের এক বছর পর জামাতা নয়ন শিকদারকে পান বরজ নির্মাণ করার জন্য এক লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। ধারদেনা পরিশোধ করার জন্য নয়ন সিকদার গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রেশমার কাছে আরও আড়াই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্বামী নয়ন ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন ৫দিন আগে রেশমাকে নির্যাতন করে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। গত শনিবার বিকালে নয়ন ও তার এক বন্ধু বাড়িতে এসে শিশু সন্তানসহ রেশমাকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়। আড়াই লাখ টাকা যৌতুরের দাবিতে ওই রাতেই আবারো রেশমাকে নির্যাতন করা হলে তার মৃত্যু ঘটে।

ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে রেশমা আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারনা চালায় নয়নের পরিবার। আবু জানান, রাত দেড়টার দিকে নয়নের প্রতিবেশী বন্ধু মুঠোফোনে রেশমার মৃত্যু সংবাদ জানান। রোববার ভোরে নয়নের বাড়িতে গিয়ে খাটের ওপর মেয়ে রেশমার লাশ দেখতে পান। তার আগেই পালিয়ে গেছে জামাতা নয়ন ও তার বাড়ির লোকজন।


গৌরনদী মডেল থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, খবর পেয়ে রেশমার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রোববার দুপুরে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। মাদকাসক্ত স্বামী নয়ন শিকদার যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রেশমা আক্তারকে কিল-ঘুষি মারার পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে। নিহত রেশমার শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

ওসি আরো জানান, কয়েকমাস আগে মাদক সেবনের সময় নয়ন সিকদারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। নিহতের বাবা আবু ফকির বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *