শিক্ষানবিশ অফিসার নিয়োগ দেবে গ্রামীন ব্যাংক

Spread the love

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রশিক্ষণ প্রকল্পে অস্থায়ীভাবে ‘শিক্ষানবিশ অফিসার’ নিয়োগ দেওয়া হবে। দেশের যেকোনো স্থানে কাজ করতে আগ্রহী সাধারণ (পুরুষ ও মহিলা) প্রার্থীদের অনলাইনে (erecruit.ghrmplus.com) এবং বিভাগীয় প্রার্থীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের অনুরোধ করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ২১ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় এ-সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। নিয়োগসংক্রান্ত দরকারি তথ্য ও প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন গ্রামীণ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ও শাখা ব্যবস্থাপক (রাঙামাটি জোন) মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক

গ্রামীণ ব্যাংকে সাধারণত ‘শিক্ষানবিশ অফিসার’ পদে (ন্যূনতম যোগ্যতা—স্নাতক বা স্নাতকোত্তর) সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ের ঋণের টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা ‘শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক’ পদেও (যোগ্যতা—ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান) সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়।

শিক্ষানবিশ অফিসার : এই পদটি গ্রামীণ ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেলের সর্বোচ্চ পদ। এখানে সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করা প্রার্থীরা সরাসরি নিয়োগ পান। তবে এবারের আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে ‘মাস্টার্স’ শিথিল করা হলেও স্নাতক পর্যায়ের বিষয় বা বিভাগ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি : শিক্ষানবিশ অফিসার পদের সর্বশেষ নিয়োগের (২০১৫) সময় প্রার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন ভাগে ভাগ করে কয়েক দফায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সময় ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একই দিনে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা হয়েছিল। যাঁরা ৪০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, শুধু তাঁরাই ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভায় অংশ নিয়েছিলেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান থেকে এবং লিখিত পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদ, লিখিত গণিত ও এনজিও বিষয়ক ফোকাস রাইটিং থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে চলতি নিয়োগ অনলাইন প্রক্রিয়ায় হওয়ায় স্বভাবতই তুলনামূলক বেশি প্রার্থী আবেদন করবেন। এমনটি হলে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হতে পারে। অন্যান্য ব্যাংকের মতোই বিভিন্ন কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরীক্ষা যে পদ্ধতিতেই হোক, কোনো নিয়োগ পরীক্ষায় একই সঙ্গে এবং একই খাতায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা (লেখার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করা থাকবে) নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই নিয়োগ প্রস্তুতির জন্য বাজারের প্রচলিত বিভিন্ন ব্যাংক নিয়োগ প্রস্তুতির বই দেখতে পারেন। ২০১৫ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্যানেলসহ দেড় শতাধিক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। গতবারের মতো প্যানেল নিয়োগসহ এবারও দুই শতাধিক প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হতে পারে; যদিও বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।

দায়িত্ব ও সুযোগ-সুবিধা : নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের যোগদানের পর দীর্ঘ এক বছর প্রশিক্ষণ সময় পার করতে হবে। প্রশিক্ষণ সময়ের প্রথম পাঁচ মাসে ১১ হাজার টাকা করে (এর সঙ্গে যাতায়াত ও মোবাইল ভাতা দেওয়া হবে) এবং পরের সাত মাসে ১২ হাজার টাকা করে (এর সঙ্গে যাতায়াত ও মোবাইল ভাতা দেওয়া হবে) প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হবে। হেড অফিসে যোগদানের পর হেড অফিসের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে (আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা করে) ও ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় প্রশিক্ষণ ও সাময়িক পোস্টিং দেওয়া হয়। প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে প্রথমে জোনাল অফিস ও পরবর্তীতে ব্রাঞ্চে প্রশিক্ষণার্থী অফিসার ও শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে চূড়ান্ত পোস্টিং দেওয়া হয়। ১ বছর প্রশিক্ষণ পিরিয়ড শেষে প্রশিক্ষণ সমাপনী পরীক্ষা তথা চূড়ান্ত পরীক্ষার আয়োজন করা হয় (প্রশিক্ষণকালীন পরীক্ষাগুলোতে সাধারণত সবাই উত্তীর্ণ হয়)।

চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সিনিয়র অফিসার হিসেবে জাতীয় বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেডের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। বেতন ও উৎসব ভাতার বাইরে একজন সিনিয়র অফিসার প্রতিবছর ইনসেন্টিভস ও প্রফিট বোনাস পান। এ ছাড়া পদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হাউস লোনও পান। চাকরিকালে সন্তোষজনক পারফরম্যান্স ও নির্দিষ্ট ফিডার মেয়াদ পূর্তিতে একজন কর্মকর্তা সিনিয়র অফিসার থেকে ডেপুটি প্রিন্সিপাল অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এরিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত), অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত), জেনারেল ম্যানেজার (প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত) পদে পদোন্নতি পাবেন। গ্রামীণ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী সিনিয়র অফিসার ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের নিজ নিজ জোনে পদায়ন হয় না।

একনজরে গ্রামীণ ব্যাংক

[ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট তথ্য থেকে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে]

গ্রামীণ ব্যাংক একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থা এবং সামাজিক উন্নয়ন ব্যাংক। এর প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্যাংকটি মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচজনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে। যেহেতু গ্রামীণ ব্যাংক একটি অ-তফসিলি ব্যাংক, তাই এর কার্যক্রম অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে অনেকটাই আলাদা ও ভিন্ন। নিজস্ব স্বাধীন পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। গ্রামীন ব্যাংকের ৪০টি জোন এবং দুই হাজার ৫৬৮টি শাখা অফিস রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ৯৩ শতাংশ গ্রামে (৮১ হাজার ৬৭৮টি) তারা কার্যক্রম চালাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *