বাদী-স্বাক্ষীদের না জানিয়েই অভিযোগপত্র দিল পুলিশ

Spread the love

নাগরিক রিপোট : পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মামলার বাদী, ভিকটিম (ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি) ও স্বাক্ষীদের না জানিয়েই প্রধান আসামিকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির নাম মাহাবুব আলম মোল্লা (৩৮)।তিনি উপজেলার নাজিরপুর ছোট ডালিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নাজিরপুর ইউনয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহাবুব আলম বলেন, পাওনা ৫১ লাখ  টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি তাঁকে (মাহাবুব আলম) কুপিয়ে গ্ররুতর জখম করা হয়েছে। ওই সময় তাঁর ডান হাতের আঙ্গুল, বাঁ হাতের কবজি, দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম হয়। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি আহত অবস্থায় ঢাকার জাতীয় অর্থোপেটিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান এবং ঢাকা মেডিকেলে দীর্ঘদীন চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী শিলা বেগম ২৭ জানুয়ারি মো. জসিম উদ্দিন আকনকে (৩৬)প্রধান আসামি করে তিনজনের নাম উল্লেখ করে আরও চার-পাঁচজন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা করেন।

মাহাবুব আলম অভিযোগ করেছেন,মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ জাহিদ আলমের দাবিকৃত এক লাখ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মামলার বাদী, আমি ও এজাহারে উল্লেখ স্বাক্ষীদের না জানিয়েই প্রধান আসামিকে বাদ দিয়ে দুই ব্যক্তির নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন,সর্বশেষ ৬ অক্টোবর মামলার খোঁজ-খবর নিতে থানায় গেলে শেখ জাহিদ আলম ও বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন খুব শিগগির অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। স্বাক্ষী নিয়ে আসেন। পরের দিন ৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর স্বাক্ষী নিয়ে থানায় যান। তখন তাঁর (মাহাবুব) আইনজীবী মুঠোফোনে জানান চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধান আসামি জসিম উদ্দিনকে বাদ দিয়ে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

গত মঙ্গলবার ওই অভিযোগপত্রের সইমোহর উঠিয়ে দেখতে পান সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে ওই অভিযোগপত্র তৈরি করে আদালতে দাখিল করা হয়েছে।চিকিৎসকের সনদের সঙ্গে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রের কোনো মিল নেই।ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা সনদে গুরুতর জখমের কথা উল্লেখ থাকলেও অভিযোগপত্রে সাধারণ জখমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

পটুয়াখালী জজ আদালতের আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান টোটন বলেন,‘ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি ও স্বাক্ষীদৈর স্বাক্ষী না নিয়ে অভিযোগপত্র দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

এসআই শেখ জাহিদ আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,‘টাকা চাওয়ার কথা সত্য না।আর তদন্তে যেটা পেয়েছি, সেভাবেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।’স্বাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও তিনি দাবি করেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা সনদ আসতে বিলম্ব হয়েছে। এ কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সনদ অনুযায়ী সাধারণ জখমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা সনদে গুরুতর জখমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘যেহেতু সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়ার সুযোগ আছে।তাই স্বাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলেই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *