বরিশাল নগর বিএনপির সম্মেলন নিয়ে তোরজোর

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: টানা সাত বছর পর বরিশাল মহানগর বিএনপির সম্মেলনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমান কমিটির নেতারাও দলের কাছে লিখিত সম্মেলন দাবী করেছে। এর ফলে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পেতে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে এখানকার বিএনপির ৩টি সক্রিয় গ্রæপ। এ গ্রæপগুলো গত ৩ যুগ বরিশাল বিএনপিতে একছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী নেতা কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারকে হটাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।


বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, মহানগর বিএনপির সম্মেলন চেয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠির প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে জানানো হয়নি। তবে সম্প্রতি চট্টগামে বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে আহŸায়ন কমিটি গঠনকে উদাহরন হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বরিশাল মহানগরের ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করা হতে পারে।


দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার প্রায় তিন যুগ বরিশাল বিএনপির একছত্র অধিপত্যের নেতা। তিনি ২০০৯ সাল থেকে মহানগর বিএনপির সভাপতিও। দলের বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, আসন্ন সম্মেলনের মাধ্যমে সরোয়ারের একছত্র আধিপত্য খর্ব করতে দলের মধ্যে ৩ট গ্রæপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।


এ গ্রæপগুলো হচ্ছে- কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন ও সাবেক ছাত্র নেতা আলী হায়দার বাবুলের নেতৃত্বাধীন একটি গ্রæপ, সাবেক সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন একটি গ্রæপ। সিনিয়র নেতাদের দুই গ্রæপের পাশাপাশি ৯০ দশকের ছাত্রদল নেতারা একট্টা হয়েছেন নগর বিএনপির নেতৃত্বে আসতে।


সাবেক ছাত্রদল নেতাদের একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে, তারা চাচ্ছেন নগরের সাধারন সম্পাদক পদে তাদের মধ্যে থেকে কেউ আসুক। এই গ্রæপে আছেন মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা আকতার হোসেন মেবুল, সিটি কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মীর জাহিদুল কবির, সহ সাধারন সম্পাদক আ ন ম সাইফুল আহসান আজিমসহ একাধীক ছাত্রনেতা।


মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব চাওয়া প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি এই নগরীর সন্তান, ৮০ দশকে ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছিলাম। এখন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূন পদে আছি। তারপরও দলের প্রয়োজনে কেন্দ্র থেকে মহানগর বিএনপির দায়িত্ব দেয়া হলে গ্রহন করতে প্রস্তত আছি। আলী হায়দার বাবুল প্রসঙ্গে শিরিন তিনি বলেন, তিনিও ৮০ দশকে স্থানীয় শীর্ষ ছাত্রদল নেতা হওয়ায় তার সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে বারাবার বঞ্চিত হচ্ছেন। একজন শুভাকাংক্ষি হিসাবে চাচ্ছি তিনি দলের গুরুত্বপূর্ন নেতৃত্বে আসুক। শিরিনের মতে, দলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে মজিবর রহমান সরোয়ারের মহানগরের নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়া উচিত।


মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসিন মন্টু বলেন, আমি আগেও সাধারন সম্পাদক প্রত্যাশা করে বঞ্চিত হয়েছি, এবারও সাধারন পদ চাই’। তিনি বলেন, বর্তমান কমিটি ২০১৩ সালের অক্টোবারে গঠিত হয়। এর মধ্যে দলে অনেক যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানদের উচিত স্বেচ্ছায় সরে গিয়ে নতুনদের নেতৃত্বে আসার সুযোগ করে দেয়া। সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনিও সাবেক সভাপতি ছিলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও চাচ্ছেন নতুন নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে চমক হতেও পারে।


এব্যপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার বৃহস্পতিবার বলেন, কমিটি মেয়া উত্তীর্ন হওয়ায় তিনি দলের কাছে নগর বিএনপির কাউন্সিল চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। এটি করতে হলে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি করতে হবে। কাউন্সিলরদের মতামতে নতুন নেতৃত্ব গঠিত হবে। বিএনপি নেতা সরোয়ার বলেন, গত বার কমিটি গঠনকালে প্রার্থীতার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। এবারও যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন। কেননা নেতৃত্বের পরিবর্তন কিংবা নেতৃত্বের পূনর্গঠন হতেই পারে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *