আলু শুন্য বরিশাল

Spread the love

নাগরিক নিরপোর্ট: দক্ষিনাঞ্চলের সবচেয়ে বৃহৎ নিত্যপন্যের আড়ত নগরীর পিয়াজপট্টি আরতঘর আলু শুন্য হয়ে পড়েছে। সেখানকার ৩৪টি আড়তে গত ৪দিন ধরে আলুর তীব্র সংকট। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা লোকসান দিয়ে আলু তুলতে চাচ্ছেন না। ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানাও গুনতে চান না। এর প্রভাবে নগরীর খুচরাবাজারে ২/৪ কেজি আলু পাওয়া গেলেও তা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে। অভিযোগ উঠেছে, যে আলু রয়েছে তা মজুদ করে কৌশলে খুচরা বাজারে আলু চড়া দামে পাঠাচ্ছে আড়তদাররা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারন।


রোববার নগরীর পিয়াজপট্টি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, কোন আড়তেই আলু বিক্রি হচ্ছে না। দিপক দাস নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি পোর্ট রোডে ২/১ জায়গায় কয়েক কেজি আলু দেখেছেন। আড়তঘরে গিয়েও দেখেছেন আলু নেই। আড়তের আসপাশে এক কেজি আলু ৪৫ টাকা দরে কিনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আলু তো পচে যাবে কিন্তু জনগন খেতে পারলেন না। আড়তঘরের পাশে ঝুপড়ি দোকানে অল্প সংখ্যক আলু বিক্রি করছেন বিক্রেতা হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, কেজি প্রতি ৪৫ টাকায়ও একদিন পর আর পাওয়া যাবে না।


আড়তঘরের পায়েল এনান্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী এনায়েত হোসেন বলেন, বরিশালে আলু উৎপাদন হয় না, হিমাগারও নেই। এখানকার আলু উত্তরাঞ্চল থেকে আসছে। এবার বন্যায় সবজির উৎপাদন কম হওয়ায় মানুষ আলুর উপরে নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। যেকারনে আলুর দর বেড়েছে। তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চল থেকে ৩২ থেকে ৩৩ টাকা দরে আলু কিনে আনলে তারা কি করে ৩০ টাকায় বিক্রি করবেন। বেশি বেচলেও ভ্রাম্যামান আদালত জরিমানা করছে। তাই লোকসান দিয়ে তারা আর আলু বিক্রি করতে চান না। যেকারনে আড়তে গত বৃহস্পতিবার থেকে আলু নেই।


বরিশাল আড়তঘর মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক দুলাল মোল্লা বলেন, গত ৩/৪দিন ধরে আলু আমাদানী হচ্ছে না। এখন কোন ঘরে আলু নেই। তিনি বলেন, বরিশাল নগরীতে দৈনিক ১০ গাড়ি আলু দরকার। কিন্তু রোববার এসেছে মাত্র এক গাড়ি। যা হাতে হাতে বন্টন হয়ে গেছে। রাজশাহী, মুন্সীগঞ্জ স্টোরে আলুর দাম বেশি। ব্যপারীরা তাই লোকসানে আলু আনতে চাচ্ছেন না। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসককে এ বিষয়টি অবহিত করা হলেও তিনি বলেছেন সরকার নির্ধারিত দরের (পাইকারী ৩০ টাকা কেজি) বাইরে আলু কেনাবেচা করা যাবে না। যেকারনে আড়তদাররা আলু আমদানীতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।


এদিকে নগরীর চৌমাথা বাজার, বটতলা বাজার, নতুনবাজার ঘুরে দেখা গেছে আলুর তীব্র সংকট। পূর্বের অল্পকিছু থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। যেকারনে বাজারে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে সাধারন মানুষকে। তাদের অভিযোগ আলু মজুদ করে বাড়তি দাম নেয়া হচ্ছে।


বরিশাল জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা এ এস এম হাসান সারোয়ার শিবলি, আলু না থাকলে কি করা যাবে। এবছর আলুর সংকট রয়েছে। এই মুহুর্তে যে গ্রæপের কাছে আলু আছে তারা সরকারী দাম মানছে না। আড়তদাররা মোবাইল কোর্টের ভয়ে আলু আনছেনও না। তিনি স্বীকার করেন বরিশালে আলু নাই। কিছু মজুদ থাকলেও তা সরিয়ে রাখা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান মার্কেটিং কর্মকর্তা এ এস এম হাসান সারোয়ার।


এব্যপারে বরিশাল জেলাপ্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, আলুর সমাধান হয়ে যাবে। এটি বরিশালের বিষয় না। অচিরেই আলু বিভিন্ন স্থান থেকে আসবে বলে জানান জেলাপ্রশাসক অজিয়র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *