বাসে ড্রামের মধ্যে সেই নারীর লাশের পরিচয় মিলল

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় যাত্রীবাহি বাসে ড্রামের মধ্যে থেকে উদ্ধার হওয়া নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে। তিনি কাতার প্রবাসী শহিদুল হাওলাদারের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (৩৪)। লাশ উদ্ধারের ২০ ঘন্টা পর শনিবার বিকালে সাবিনা ইয়াসমিনের লাশ শনাক্ত করেছেন তার দেবর মনির হাওলাদার। লাশের পরিচয় জানার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ আফজাল হোসেন।


শুক্রবার রাত ১১টার দিকে জেলার গৌরনদীর ভুরঘাটা বাসষ্টান্ডে অভ্যন্তরীন রুটের পিএস ক্লাসিক পরিবহন নামক বাস থেকে একটি ড্রামের মধ্যে সাবিনা ইয়াসমিনের লাশ পাওয়া যায়। তার আগেই বাস থেকে পালিয়ে যান ওই ড্রামের সঙ্গে থাকা এক পুরুষ যাত্রী।


গৌরনদী পৌর শহরের গ্যারাকুল এলাকার বাসিন্দা দেবর মনির হাওলাদার জানান, সাবিনা ইয়াসমিন হচ্ছেন কাতার প্রবাসী বড় ভাই শহিদুল হাওলাদারের স্ত্রী। তিনি ৩ সন্তান নিয়ে নারায়গঞ্জের ফতুল্লায় থাকতেন। কাতারে জনশক্তি পাঠানোর ব্যবসা করতেন শহিদুল হাওলাদার। দেশে তার স্ত্রী এ ব্যাবসার টাকা লেনদেন করতেন।


মনির হাওলাদার আরও জানান, গৌরনদীর মাহিলাড়া এলাকার খালেক হাওলাদার নামক এক ব্যক্তি কাতার যাওয়ার জন শহিদুলের স্ত্রীকে আড়াই লাখ টাকা দিয়েছেন। খালেক হাওলাদার আরও টাকা দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। ওই টাকা নেয়ার জন্য সাবিনা ইয়ামিন শুক্রবার ভোরে দুই সন্তান নিয়ে গৌরনদীতে আসেন। সকাল ১০টায় টাকা আনতে বরিশাল নগরীতে যাওয়ার কথা বলে সন্তানদের বাড়ি রেখে বের হয়ে যান সাবিনা ইয়াসমিন। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।


যাত্রীবাহি বাসে ড্রামের মধ্যে লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেছেন। তিনি জানান, নিহত নারীর বয়স আনুমানিক ৩০-৩৪ বছর। পড়নে ছিল স্যালোয়া-কামিজের ওপর বোরকা। নিহত নারীর মাথার পেছন দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, উদ্ধার হওয়ার ১২-১৪ ঘন্টা আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতক লাশটি গুম করার জন্য চেস্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যায়।


‘পিএস ক্লাসিক’ বাসের চালক জয়দেব জানান, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রীসহ রাতের দিকে তিনি গৌরনদীর ভুরঘাটার উদ্দেশে রওনা হন। বরিশাল নগরীতে প্রবেশমুখ গড়িয়ারপাড় থেকে পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি ড্রামটি নিয়ে বাসে উঠেন। তার পরনে পঞ্জাবি ও মাথায় টুপি ছিল। ড্রামে কাঁচের জিনিস রয়েছে বলে সুপারভাইজার ও হেলপারকে ওই যাত্রী জানিয়েছিলো। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসটি ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে পৌছলে ড্রামের মালিক ভ্যান আনার কথা বলে নেমে যান।

দীর্ঘক্ষুন অতিবাহিত হলেও তিনি ফিরে না আসায় বাসের শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। এরপর তারা ড্রামের মুখ খুললে ভেতরে বোরকা পড়া এক নারীর মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *