নাগরিক রিপোর্ট: বরিশালে চরমোনাই দরবার শরীফের ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শুক্রবার শুরু হয়েছে। জুম্মার নামাজের পর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিলের সুচনা করেন। সোমবার সকাল ৮টায় আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে। এরই মধ্যে লক্ষাধিক মুসুল্লী মাহফিল প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তারা দাবী করেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রামন রোধে মাহফিল প্রাঙ্গনে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সবগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, করোনাকালীন চলামান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা সম্ভাব কিনা তা নিয়ে শংকা রয়েছে। তাই মাহফিলের অনুমতিও দেয়া হয়নি।
চরমোনাই পীরের সহোদর ও চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুফতি এসাহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবছর দুটি মাহফিলের মধ্যে আগ্রহায়ন মাসের মাহফিলে মুসুল্লীর উপস্থিতি কম হয়। এজন্য অগ্রায়হনের মাহফিলে প্যান্ডেলও করা হয় মাত্র দুটি। করোনাভাইরাস সংক্রামন রোধে এবারের মাহফিলে মুসুল্লীদের আগমন যাতে কম হয়, সেজন্য মাহফিলের কোন প্রচার-প্রচারনা চালানো হয়নি। তারপরও বৃহস্পতিবার বিকালের মধ্যে দুটি প্যান্ডেলই প্রায় পরিপূর্ন হয়ে গেছে মুসুল্লীতে। সড়ক ও নৌপথে মুসুল্লীদের আগমন অব্যাহত রয়েছে।
সেখানকার স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা সম্পর্কে জানতে চাইলে এসাহাক মো. আবুল খায়ের বলেন, মাহফিল প্রাঙ্গনে প্রবেশের সবকটি পয়েন্টে স্বেচ্ছাসেবকরা দাড়িযে মুসুল্লীদের মধ্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করছেন। শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য সর্বাক্ষনিক প্রচার চালানো হচ্ছে।
চরমোনাই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মিলন রায় শুক্রবার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে জটিলতা ছিল বলে শুনেছেন। তবে শেষ মুহর্তে কি হয়েছে তা তার জানা নেই। একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রাসু মিয়া শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায় বলেন, তিনি মাহফিল প্রাঙ্গনে অবস্থান করছেন। চরমোনাইর দুটি মাঠে ইতোমধ্যে মুসল্লীরা এসেছেন। কোন সমস্যা নেই। আগের মতই মাঠ ভরে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনও এসেছে।
তবে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান বলেন, আমরা চরমোনাইর মাহফিলের বিষয়ে কোন অফিসিয়ালি অনুমোদন দেইনি। কেননা বরিশালবাসী করোনার হুমকিতে পড়তে পারেন। বৃহস্পতিবার করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক এক সভায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি সবাইকে অবহিত করা হয়েছে। এখন বিষয়টি দেখবে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, গত ১০-১৫দিন আগে চরমোনাইর মাহফিলের বিষয়ে কথা উঠেছিল। তখনই শীতের সংক্রমন বাড়তে শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন পুলিশ চরমোনাইর মাহফিলের আয়োজকদের জানিয়েছেন যে মাহফিলের অনুমতি দেয়া হবে না। কেননা করোনার প্রাদুর্ভাবে একণ মাহফিল করা সঠিক হবে না। এতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা অসম্ভাব। কিন্তু এরপরও তারা যদি মাহফিলের আয়োজন করে তবে সেটার দায় মাহফিল আয়োজকদের নিতে হবে। চরমনোইর অনেক বিজ্ঞজন আছেন। তারাই বিবেচনা করবেন এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা সম্ভাব কিনা।