ডায়াবেটিক টাইপ- ২ হলে খাদ্যাভাসে যা করবেন

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : ডায়াবেটিস টাইপ-টু রোগে আক্রান্ত রোগী নির্ধারিত ঔষধ গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত ডায়েট চার্ট এবং শরীর চর্চার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকতে পারে সেরা বা সবচেয়ে ভালো ডায়েট চার্ট কোনটি?

সম্প্রতি লন্ডন ভিত্তিক পত্রিকা দ্য এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিকাল উপদেষ্টা এমা এলভিন বলেন, আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে অথবা ভবিষ্যতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে আপনার জন্য কোন খাবারটি সবচেয়ে ভালো এবং কোনটি খারাপ তা এখনই বাচাই করতে হবে। যদি এখনো তা নির্ধারণ না করেন, তবে এ বিষয়ে সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। এলভিন বলেন, ডায়াবেটিসের জন্য কোন নির্দিষ্ট খাবার নেই, যা সবাইকে গ্রহণ বা বর্জন করতে হবে। তবে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায় রাখা বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে শুরুটা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার, ফলমূল এবং শাকসবজি দিয়ে করলে দুর্দান্ত হবে বলেও মনে করেন এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। যেমন ধরুন- ব্রাউন রাইস, হোল ওটস, বাকউইট ইত্যাদি। এখানে একটা বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে ডায়াবেটিস হওয়া মানে এই না যে, আপনাকে সম্পূর্ণ চিনিমুক্ত ডায়েট করতে হবে।
তবে ফলমূলের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে থাকা চিনি, কেক বা বিস্কুটে থাকা চিনির থেকে অনেক ভালো বিকল্প হতে পারে। এছাড়াও সূর্যমুখী এবং জলপাইয়ের মতো চর্বি জাতীয় খাবারকেও তালিকায় রাখতে পারেন বলে যোগ করেন এলভিন তার বক্তব্যে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর ডায়েট তৈরিতে লবণ, লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস থেকে দূরে রাখতে হবে নিজেকে। লাল মাংস বলতে এখানে গরু বা মহিষের মাংস ইত্যাদিকে বোঝানো হয়েছে। এগুলো বাদে যেকোন স্বাস্থ্যকর খাবার আপনি অনায়াসে গ্রহণ করতে পারেন বলেও আশ্বস্ত করেন এলভিন।

লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংসের পরিবর্তে আপনি মটরশুটি, মসুর ডাল, ডিম, মুরগির মাংস বা বাদামও খেতে পারেন। আর লবণের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন হার্বস বা ঔষধি এবং মসলা জতীয় খাবার গ্রহণ করতে পারেন বলেও জানান তিনি। যুক্তরাজ্যে প্রায় দশ লাখ মানুষ এই ডায়াবেটিস টাইপ-টু কে সঙ্গী করে জীবনযাপন করছেন। তবে এভাবে ডায়েট অনুসরণের ফলাফল বেশ ধীর গতিতে হয়। যার ফলে লোকজন তাদের রোগের লক্ষণগুলি সবসময় লক্ষ্য করেন না বলেও সাক্ষাতকারে ব্যাখ্যা করেন এমা এলভিন।

ডায়াবেটিস টাইপ-টু এর লক্ষণগুলো হলো, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, ক্লান্তি, মাত্রারিক্ত ওজন কমে যাওয়া, ঘন ঘন প্রসাব হওয়া, দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা, কাঁটা বা ক্ষত স্থান শুকাতে বেশি সময় লাগা এবং মুখে বা গলায় বার বার ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ লক্ষণগুলো যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে লক্ষ্য করে তবে তার ডায়াবেটিস টাইপ-টু হওয়ার মাত্রা অনেকগুণ বেড়ে যায়। তবে অনেকের মধ্যে এই লক্ষণগুলো নাও থাকতে পারে এবং রোগ সনাক্তের আগে দশ বছর পর্যন্ত এই অবস্থার সাথে বেঁচে থাকতে পারে বলেও জানান এমা এলভিন।

টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়সমূহ: এই রোগের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোর কথা বলতে গেলে এমন কিছু জিনিস সামনে আসে যা আপনি হাজার চেষ্টা করলেও পরিবর্তন করতে পারবেন না। যেমন: পারিবারিকভাবে এই রোগ থেকে থাকলে আপনারও হতে পারে, বয়স, জাতিগত পটভূমি এবং চিকিৎসাগতভাবেও আসতে পারে আপনার মধ্যে। সামগ্রিক ঝুঁকি জিনগত বা পরিবেশগত কারণগুলোর একটি জটিল ইন্টারপেল বা আভ্যন্তরীণ বিষয় দ্বারাও অনেক সময় নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাছাড়া শারীরিক অতিরিক্ত ওজনও এই রোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণ, যার কোনটাই আপনি চাইলেও পরিবর্তন করতে পারবেন না বলেও অভিহিত করেন এলভিন। তাই পরিমিত ও ডায়েট অনুসারে খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত শরীর চর্চাই ডায়াবেটিস টাইপ-টু কে নিয়ন্ত্রেণে রাখার বড় উপায় বলে মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *