সৈয়দ জুয়েল: লাইলি মজনু, শিরি ফরহাদ, চন্ডীদাস রজকিনী, এদের প্রেম কাহিনী যেরকম আমাদের মাঝে অমর হয়ে রয়েছে, আধুনিক যুগের প্রেম কি অমরত্বকে জয় করার পথে হাঁটছে!
আধুনিক বিশ্ব ইমো, হোয়াটস আপ, মেসেঞ্জার এ জাতীয় প্রযুক্তি ব্যাবহারে ভালবাসার কথোপকথনে নিয়ে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এই সেদিনের কথা, যখন -একটি চিঠির জন্য ভালবাসার মানুষরা পথের দিকে তাকিয়ে থাকতো ডাক পিয়নের আশায়,কখন বলে-“চিঠি আছে চিঠি”।
এরও বহু আগে আরেকটি হারিয়ে যাওয়া অধ্যায় ছিলো যখন কবুতরের পায়ে বা গলায় চিঠি পাঠানো হত ভালবাসার মানুষের কাছে। পুরানো দিনে প্রেমিক তার প্রেমিকার পুকুর পাড় দিয়ে হাঁটা,যে রাস্তা দিয়ে প্রিয় মানুষটি হেঁটে যাবে-সেই পথে অপলক তাকিয়ে থাকা। কদাচিৎ পাশে বসার সৌভাগ্য হলেও পাড়া পড়শি কেউ দেখে ফেলার ভয়ে জবুথুবু হয়ে দু কোনে দুজন বসলেও আবেগের কমতি ছিলনা এতটুকু। অতি কাছে এসে প্রেয়সীর হাত যদি কোন সাহসী প্রেমিক ধরেও ফেলতো-বিশ্ব জয়ের আনন্দের রেস থাকতো বহুদিন, আবার অনেক আদূরে প্রেমিকারা আবার হাত পাখায়-“ভূলনা আমায়” লিখে উপহার দিত প্রেমিকদের, রুমালেও লিখে দিত ভালবাসার নানান কথা।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে- হারিয়ে যাওয়া দিনে ভালবাসার বন্ধন যতটা দৃঢ় ছিলো, মোবাইল ফোনের এ যুগে এত কাছে থেকেও-ভালবাসার সেই সফল ঘ্রানটা আর নেই। মুখে আর হাতের আঙ্গুলের মাঝেই অনেকটা আটকে আছে ভালবাসা, অন্তরের মাঝে আর বাস করেনা হারিয়ে যাওয়া চিঠির পাতার সেই ঘ্রান।
সবকিছুর মতই ভালবাসায়ও ঢুকে পরেছে যান্ত্রিকতা। অস্থির চৈত্রের বেসামাল খর তাপে ভালবাসার বসন্ত যেন মরে যেতে বসেছে। পুকুর ঘাটে পা দুলিয়ে মুখোমুখি বসে হিজল ফুলের সুবাস ভরা দিনের গল্পে আবারও কি হাসবে প্রকৃতি? যান্ত্রিক ভালবাসা ছেরে আবারও কি সর্ষে ফুলের মাঠে দৌড়াবে কিশোরী সে ভালবাসা!