নাগরিক ডেস্ক : সরকারিভাবে নির্মিত সড়ক-সংলগ্ন নিজস্ব জমিতে রয়েছে ‘হাজী শহিদ মার্কেট (বিপণিবিতান)’। ওই বিপণিবিতানের সামনের অংশ দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে দেয়াল। এতে ওই বিপনিবিতান বন্ধ হয়ে যায়।
এমন ঘটনা পুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া লঞ্চঘাট এলাকায়।
আওয়ামী লীগদলীয় স্থানীয় সাংসদ আ.স.ম ফিরোজের ছোট ভাই একেএম ফরিদ মোল্লা শ্রমিক দিয়ে ওই দেয়াল নির্মাণ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তর-দক্ষিণে কালাইয়া লঞ্চঘাট সড়ক। সড়কটির উত্তর মাথায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের (বিআইডব্লিউটিএ) এর পন্টুণ। সড়কের দুই পাশেই রয়েছে বিভিন্ন দোকান। পশ্চিম পাশের অংশের হাজী শহিদ মার্কেটের (বিপণিবিতানের) সামনে দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে দেয়াল নির্মাণ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। শ্রমিকেরা জানান, ফরিদ মোল্লা (স্থানীয় সাংসদের ছোট ভাই) এই দেয়াল নির্মাণ করাচ্ছেন।
খোজ নিয়ে জানা যায়,ওই সড়ক-সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ৬৫ শতাংশ জমির ক্রয় সূত্রে মালিক হলেন স্থানীয় মো. শহীদ আলম। পূর্বপাশের সমান অংশের মালিক হলেন স্থানীয় সাংসদ আ.স.ম ফিরোজের স্ত্রী মোসা. দেলোয়ারা রুনু ।
মো. সহিদ আলম ২০১৩ সালে সড়ক-সংলগ্ন উত্তর-দক্ষিণে লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রায় পৌনে চারশ ফুট লম্বা বিপণিবিতান নির্মাণ করেন। সেখানে মুদিমনোহরী, ওয়ার্কশপ, হার্ডওয়ার, ওষুধ ও ফলের মোট ২৮ টি দোকান রয়েছে। পূর্বপাশেও সাংসদ স্ত্রীর মালিকাধীন জমিতেও বিপণিবিতান রয়েছে।
শহিদ আলম অভিযোগ করেছেন,‘ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাংসদের ভাই ফরিদ মোল্লা সরকারি সড়কের পাশে আমার নিজস্ব সম্পত্তিতে নির্মিত বিপণিবিতানের সম্মুখে দেয়াল নির্মাণ করে তাঁর বিপণিবিতান বন্ধ করে দিয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এতে ২৮ টি পরিবার পথে বসার উপক্রম হয়েছে। কোথায় গিয়ে বিচার চাইবো? আপনারা (সাংবাদিক) একটু সত্য ঘটনা তুলে ধরুন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন,‘দেখলেই বুঝা যায় এই দেয়াল তাঁদের (সাংসদ পরিবারের) কোনো উপকারে আসবে না। একমাত্র বিপণিবিতান বন্ধ করে দেওয়ার জন্যই এই দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। তাঁরা (সাংসদ পরিবার) প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। তবে আল্লাহ নিশ্চয়ই এর বিচার করবে। সেই বিচার দেখার অপেক্ষায় রইলাম।’
একেএম ফরিদ মোল্লা মুঠোফোনে বলেন,তাঁদের জমির ওপর দিয়ে সরকার সড়ক নির্মাণ করেছে। ওই সড়কের পশ্চিম পাশে তাঁদের আরও আট ফুট জমি আছে। সেই জমিতে দেয়াল নির্মাণ করছেন। দেয়ালের উপকিারিতা কি? আর সরকারিভাবে নির্মিত সড়কের পাশে অন্য ব্যক্তির বিপণিবিতানের সামনে দেয়াল নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সামনাসামনি কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন। এরপর আর ফোন ধরেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন,‘সরকারিভাবে নির্মিত সড়কের পাশে দেয়াল নির্মাণ করে কারো যাতায়াতে বাঁধা কিংবা বিপণিবিতানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা অন্যায়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’