পুলক চ্যাটাজি, অতিথি রিপোটার : বানারীপাড়ার কোল ঘেষে বয়ে গেছে সন্ধ্যা নদী। সন্ধ্যা তীরের বানারীপাড়ার প্রাণকেন্দ্রে ছিল কবি শঙ্খ ঘোষের পৈত্রিক বাড়ি। সর্বশেষ কবি তার পূর্ব পুরুষের ভ’মিতে এসেছিলেন ১৯৯৭ সালে।
কবির বংশিয় ভ্রাতুস্পুত্র বানারীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার তরুন ঘোষ এ প্রতিবেদককে বলেন, বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লার বাড়ির পশ্চিম পাশেই ছিল কবির পৈত্রিক নিবাস। তরুন ঘোষ বলেন, কবি বানারীপাড়া এসে পৈত্রিক ভিটা বাড়ির সহ তার শৈশবের স্মতি জড়ানো স্থানগুলোর সর্বশেষ ঘুওে গেছেন ১৯৯৭ সালে।
তরুন ঘোষ বলেন, কবি শঙ্খ ঘোষ সন্ধ্যা নদীকে খুব ভালবাসতেন। কোলকাতা গেলে বার বার বলতেন ‘আবার সন্ধ্যা নদীর তীরে যেতে চাই’। আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা বলেন, ‘আশির দশকেও কবি বানারীপাড়া এসেছিলেন। তখন আমাদের বাড়িতে মধ্যাহৃ ভোজ করেন’।
বানারীপাড়ার অন্যতম সংস্কৃতিজন নতুন মুখ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মানিক জানান, বানারীপাড়া পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষ বাড়িটি কবি শঙ্খ ঘোষের পূর্ব পুরুষদের ভিটা।
১৯৯৭ সালে কবি শঙ্খ ঘোষ বানারীপাড়ায় আসলে তার সঙ্গে সময় কাটানোর বিরল সুযোগ হয়েছিল তখনকার বানারীপাড়া পাইলট হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিনিয়র প্রতিবেদক সুজন হালদারের। সুজন হালদার বলেন, ‘কবি নৌকায় করে ঘুরে বেরিয়েছেন। দেখেছেন পৈত্রিক ভিটা-বাড়ি। যাওয়ার সময় পৈত্রিক ভিটার মাটি নিয়ে গেছেন কবি’।
সুজন হালদার আরও বলেন, গত বছর ৮ মার্চ কবির সঙ্গে শেষ দেখা হয় কোলকাতার কফি হাউজে। তখন কবি বলেছিলেন, ‘শেষবারের মতো আবার যেতে চাই বানারীপাড়ায়, সন্ধ্যার তীরে’।
সর্বশেষ (১৯৯৭) বানারীপাড়া ঘুরে গিয়ে কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন তার স্মতিকথা- ‘সন্ধ্যা নদীর জলে’। প্রথমা প্রকাশনা ২০১৯ সালে কবির স্মৃতিকথা বই আকাওে প্রকাশ করেছেন। ‘সন্ধ্যা নদীর জলে’- স্মৃতিকথায় কবি বলেছেন, ৫০ বছর পর চলেছি নিজ গ্রামে। পাকা রাস্তা ধরে গাড়ি চলছে বানারীপাড়ার পথে। আমাদের ছোট বেলায় বাহন ছিল নৌকা’।
কবি লিছেছেন ‘সকালের রোদে ঝলমল করছে সন্ধ্যা নদীর জল। স্টীমার ঘাট এখন আর নেই। আছে শুধু সারি বাঁধা নৌকা। মাঝিরা আমার কাছে জানতে চায়, আমি কি ওপারে যেতে চাই? —— সন্ধ্যা নদী ছুয়ে আছে আমাদের গ্রাম।
বানারীপাড়ার সংস্কৃতিজন মোয়াজ্জেম হোসেন মানিক বলেন, কবির মৃত্যু সংবাদ জানার পর পরই বানারীপাড়া পৌর শহরে মাইকিং করিযে সবাইকে জানিয়েছি। কবির স্মৃতি আমরা রক্ষা করতে চাই। রোজার পরে শোক সভা করবো। কবি শঙ্খ ঘোষের স্মৃতি রক্ষা করতে সরকারি সহাযতা কামনা করেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন মানিক।##