নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে আজ বুধবার দিপালী উৎসব উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উপমহাদেশে একমাত্র বরিশাল মহাশ্মশানে ২০০ বছর ধরে দিপাবলী উৎসব উদযাপিত হয়। প্রতিবছর কালিপূজার আগের দিন পূন্যতিথীতে হিন্দুধর্মালম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দ্বীপ জ্বেলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দীপাবলী উৎসব উপলক্ষে বরিশাল মহাশ্মশানে সমাধি মন্দির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন স্বজনরা। ঐতিহ্যবাহি এই দিপাবলী উৎসব পালনে সব ধরণের প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ। এবছরও সংক্ষিপ্ত পরিসরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভিয্যের মাধ্যমে দিপাবলী উৎসব পালন করা হবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় প্রায় ৬ একরের মহাশ্মাশান এলাকা আলোকমালায় সজ্জিত করা হবে। বুধবার সন্ধ্যায় আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে বরিশাল মহাশ্মাশান।
বরিশাল মহাশ্মশানে প্রতিবছর শ্মশান দিপালী উৎসবে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। ঐতিহ্যের কারনে অনেকে আসেন উৎসব দেখতে। তবে অধিকাংশ মানুষই আসেন স্বজনদের সমাধিতে আলোকিত শ্রদ্ধা নিবেদন করতে। বরিশাল মহাশ্মাশানে আছে প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা বসু মাসিমা সহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি।
মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল মহাশ্মশান ঘুরে দেখা যায়, প্রয়াত স্বজনদের স্বরণে নির্মিত সমাধি মন্দিরে কেউ রঙ করছেন, কেউবা মাটির সমাধি সংস্কার করছেন। আবার অনেককে ধোয়ামোছার কাজ কাজে ব্যস্ত। শ্মশানরক্ষা কমিটির উদ্যেগে আলোকসজ্জার কাজেও দারুন ব্যস্ত কর্মীরা।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বলেন, বরিশাল মহাশ্মশানে এবছরও দিপালী উৎসব পালিত হবে সংক্ষিপ্ত পরিসরে। মেলা এবং তোরন নির্মান করা হবেনা। তবে আলোকসজ্জা করা হবে। তমাল মালাকার বলেন, মহাশ্মাসনে কাঁচাপাকা সমাধি মিলিয়ে প্রায় ৬৫ হাজার সমাধি রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৯শ সমাধি রয়েছে, যাদের স্বজনরা এদেশে থাকে না। সেই সব সমাধিগুলোকে হলুদ রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব সমাধিগুলোতে কমিটির উদ্যেগে দিপালী উৎসবের দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি, ধূপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্বলন করা হবে।