ভোটের মাঠে বহিরাগত, শংকা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহন। ভোট গ্রহনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বচানী সরঞ্জাম প্রদান করেছেন স্ব স্ব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। তবে শেষ মুহুর্তে ভোটের মাঠে বহিরাগতদের আনাগোনার খবরে নানা শংকা দেখা দিয়েছে।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান বুধবার বলেন, ভোট গ্রহনের জন্য তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষন। সুষ্ঠু ও শান্তিুপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সদরের শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন তুহিন বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরিফুজ্জামান মুন্না ভোটার ও তার কর্মীদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। নৌকার পক্ষে ভোট কারচুপি করতে মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী, ও বরিশাল নগরী থেকে লোক এনে শায়েস্তাবাদে অবস্থান করছে।

ওই ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের প্রার্থী রুবেল হোসেন মামুন তালুকদার বলেন, নৌকার পক্ষে ভোট ডাকাতি করতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের শায়েস্তাবাদে আনা হয়েছে। মেহেন্দিগঞ্জ এর পাতারহাট, উলানিয়া, মুলাদীর কাজিরচর থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসেছে। বিষয়টি আমরা পুলিশ-প্রশাসনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরিফুজ্জামান মুন্না। তার দাবি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার শেষ প্রচারনায় হাতপাখার পক্ষে চরমোনাইর দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে নায়েবে আমীর সৈয়দ মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল করিম হুশিয়ারী করে বলেন, যদি হাতপাখার কোন নেতাকর্মীকে নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। চ্যালেঞ্জ দিলাম পাড়লে একটা কর্মীর গায়ে হাত দিক। এ প্রসঙ্গে সায়েস্তাবাদ ইউপি ভোটের রিটার্নিং কর্মকর্তা সঞ্জিব সন্যামত বলেন, বহিরাহত অবস্থান করলে আইনশৃংখলাবাহিনী তা দেখবে। এধরনের লিখিত অভিযোগ তিনি পাননি।

একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে রায়পাশা-কড়াপুর, চরমোনাই ও চরকাউয়া ইউপি ভোটে। এ ৩টি ইউপিতেই বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগ করেছে চরমোনাইর প্রার্থীরা।
এদিকে সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের সবকটিতে রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। চরমোনাই পীরের দল ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীও আছে সবকটি ইউনিয়নে। ফলে ৬টি ইউনিয়নেই ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভোটাররা মনে করেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগ, নৌকার প্রার্থী এবং সমর্থকরা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তবে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকতা মোঃ আব্দুল মান্নান বলেছেন কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর লিখিত অভিযোগ দেননি।

বরিশাল নির্বাচন অফিসের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসর মো: নুরুল আলম বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনে প্রচারন বন্ধ হচ্ছে। সদরের ৬টি ইউনিয়ন যথাক্রমে চরমোনাই, চরকাউয়া, চন্দ্রমোহন, চাদপুরা, রায়পাশা-করাপুর ও সায়েস্তবাদেমোট ভোটার রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৯৭জন।

বরিশাল সদর উপজেলার ৬ ইউনিয়নই মহানগর পুলিশের আওতাধীন। এজন্য মহানগর পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান গত দুদিন প্রত্যেকটি ইউনিয়নে গিয়ে সাধারন ভোটার এবং প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুলিশ কমিশনার বুধবার পুলিশ লাইন্স এ প্যারেড গ্রাউন্ডে নির্বাচনী এলাকার আনসার ও পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আইনের দৃষ্টিতে আমরা সব প্রার্থীকে সমান চোখে দেখবো। কনস্টেবল থেকে পুলিশ কমিশনার পর্যন্ত আমরা সবাই একই টিউনে কাজ করে যাব। তাই কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা কিংবা অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিধি মোতাবেক চাহিদা অনুসারে শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *