সন্তান প্রসবের ৪৫ মিনিট পর এসএসসি পরীক্ষা দিলো দোলা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে কিশোরী বধু দোলা আক্তারের (১৭) প্রসববেদনা ওঠে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চাখার ১০ শয্যার হাসপাতালে। সেখানে সকাল সোয়া ৯টায় ছেলে সন্তান প্রসব করে ১০টায় কেন্দ্রে পৌছে সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায়।
দোলা আক্তার বানারীপাড়া উপজেলার দাশেরহাট এলাকার দুলাল সরদারের মেয়ে। প্রায় তিন বছর আগে বছর আগে নবম শ্রেনীর ছাত্রী থাকাবস্থায় তাকে বিয়ে দেয়া হয় একই উপজেলার খলিশাকোঠা গ্রামের বেসরকারী কোম্পানীর কর্মচারী আকাশ খানের সঙ্গে। সে চাখার ওয়াজেদ মেমোরিয়াল বিদালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
দোলার শ^শুর মো. ইউসুফ আলী খান জানান, সন্তান সম্ভবা দোলার রোববার শেষ পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে তার প্রসববেদনা শুরু হয়। তাকে অদুরে চাখার ১০ শয্যার হাসপাতালে নেয়া হলে সকাল সোয়া ৯ টার দিকে ছেলে সন্তান জন্ম দেয়।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসিমা বেগম জানান, দোলাকে হাসপাতালে আনার কিছুক্ষন পর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান ভুমিষ্ট হয়। শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকলেও সে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আকুতি জানাচ্ছিল। পরে স্বজনদের কাছে নবজাতক রেখে দোলা পরীক্ষা কেন্দ্রে যায়।
চাখার ইউনিয়ন ইনিস্টিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মো. জিয়াউল হাসান বলেন, সন্তান প্রসবের পর অসুস্থতার জন্য দোলাকে পরীক্ষা দিতে স্বজন ও হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা বারন করেছিল। তবে অসুস্থ শরীর নিয়ে দোলা ঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হয়েছে এবং সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। কেন্দ্রে তার সর্বাক্ষনিক শারীরিক খোঁজ নিয়েছেন শিক্ষকরা।
দোলার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলী আজিম জানান, ‘মেধাবী দোলার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি অভিভূত। সন্তান প্রসবের পর তার হাসপাতালে থাকার কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় ঠিক সময়ে দোলা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। দোলার জন্য গর্ব হচ্ছে। সে এখন আমাদের বিদ্যলয় তথা উপজেলার দৃষ্টান্ত’।
দোলার বাবা দুলাল সরদার জানান, দোলা শিশুকাল থেকেই পড়াশোনার প্রতি খুব ঝোঁক। প্রাইভেট বা কোচিং না করেও ক্লাসে মেধা তালিকায় থাকতো। তবে সংসারে আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে ও ভাল পাত্র পাওয়ায় নবম শ্রেনিতে পড়া অবস্থায় তাকে বিয়ে দেয়া হয়। শ্বশুরবড়িতে থেকেও সে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *