নগরের সাত খালের ১৮ কি:মি খনন আগামী মাসে

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা যেন বরিশাল নগরের জন্মের আপত। মেয়র আসে মেয়র যায়, সাংসদ আসে সাংসদ যায়, ডিসি আসে ডিসি যায়- কিন্ত নগরে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ কাটেই না। এর প্রধান কারন চারপাশের খালগুলো দখল আর দুষনে রুক্ষ চরে পরিনত হয়েছে। ইতোমধ্যে খালগুলোতে লোক দেখানো সংস্কারের নামে বিপুল অর্থ অপচয়ের অভিযোগ রয়েছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। নগরবাসীর সেই আপত দুর করতে এখানকার ৭টি খাল খনন হাতে নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো।

খালগুলোতে প্রাণ ফেরাতে প্রায় ৭ কোটি টাকার প্রকল্পের টেন্ডার মঙ্গলবার অনলাইনে গেছে। পাউবো বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাস এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এপ্রিলের শেষে মাঠ পর্যায়ে নগরের ৭ খাল খনন শুরু হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, প্রকল্পভুক্ত ৭টি খাল হচ্ছে- সাগরদী খাল, চাঁদমারী খাল, ভাটার খাল, জেল খাল, আমানতগঞ্জ খাল, পলাশপুর খাল এবং রূপাতলী খাল। খালগুলোর উৎস নগরীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত কীর্তনখোলা নদী। পাউবো সূত্র জানায়, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম এমপির উদ্যোগে অবশেষে এই ৭টি খাল প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খনন শুরু হচ্ছে।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাস  বলেন, নগরের মধ্যের ৭ খাল খনন প্রকল্পের টেন্ডার কাল মঙ্গলবার লাইভে গেছে (অনলাইন)। ১৪ এপ্রিল টেন্ডার ওপেন হবে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে খালগুলো খননে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, ৭টি খালের ১৮ কিলোমিটার খনন করা হবে। এর মধ্যে সাগরদী খাল এবং জেলখাল বৃহৎ। ৭টি খাল খননে ব্যায় ধরা হয়েছে ৭ কোটি টাকা।

নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক বলেন, একদিনে ৭টি খালের কাজের উদ্বোধন করা হবে। এরপর উচ্ছেদ ও সৌন্দয্যবর্ধন করা হবে। জেলার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার সবার সঙ্গে সমন্বয় করেই খাল খনন করার উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।

এ প্রসঙ্গে নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন, তার ওয়ার্ডের আওতাধীন সাগরদী খাল নগরীর সবচেয়ে বড় খাল। দীর্ঘদিনে খালটি দখল-দূষণে নালায় পরিণত হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ জলাবদ্ধতায় ভুগছে। বিভিন্ন সময়ে লোক দেখানো উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। পাউবোর এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

পাউবো উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, গত মৌসুমে অস্বাভাবিক জোয়ারে খাল-নালা দিয়ে কীর্তনখোলার পানি প্রবেশ করে নগরী প্লাবিত হলে প্রতিমন্ত্রী প্রকল্পটি গ্রহণের তাগিদ দেন। খনন সম্পন্ন করে খালের গভীরতা সৃষ্টি হলে জোয়ারের পানি নগরীতে প্রবেশ হ্রাস পেতে পারে।

গত ১৩ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে কীর্তনখোলা নদী-খাল দখল দুষন মুক্ত করার দাবী জানিয়ে নগরীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা নগরীর ৭টি খাল উদ্ধারে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করনের জোর দাবী জানান।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী সুফল পাবেন, জলাবদ্ধতাও থাকবে না। তবে নগরবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশার এই খাল খনন কার্যক্রম অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত করে দ্রæত বাস্তবায়নের আহবান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *