ক্যাসিনো কান্ডের সম্রাট মুক্ত

Spread the love

নাগরিক ডেস্ক : সব মামলায় জামিন পাওয়ার পর এবার মুক্তি পেলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। আজ বুধবার বিকেলে সম্রাটকে মুক্তির অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) ওয়ার্ডের সামনে থেকে কারারক্ষীদের সরানো হয়। বন্দী হিসেবে এখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মুক্তি পেলেও আরও কয়েক দিন বিএসএমএমইউতে থাকা লাগতে পারে সম্রাটের।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সম্রাটকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির আদেশ পেয়েই সিসিইউ থেকে কারারক্ষী সরিয়ে নেওয়া হয়।

বিএসএমএমইউ পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বলেন, সম্রাট এখনো হাসপাতালের সিসিইউতে রয়েছেন। আগামীকাল তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক পরামর্শ দেবেন আর কতদিন তাঁকে থাকতে হবে।

এর আগে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে একই আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান জামিন আদেশ দেন।

সম্রাটের পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম দুলাল ও হাবিবুর রহমান। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সম্রাটের দশ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিনের আদেশ দেন।

সম্রাটের পক্ষের আইনজীবী মো. হাবিবুর রহমান জানান, তিনটি শর্তে সম্রাটকে জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শর্তগুলো হচ্ছে, অসুস্থতা বিবেচনায়, বিদেশ গমন না করা ও মামলার হাজিরায় উপস্থিত হওয়া তাকে মেনে চলতে হবে।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

গত ২২ মার্চ দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ধার্য করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৬ এ পাঠানো হয়। বুধবার মামলাটি চার্জশুনানি ধার্য করা হয়।

উল্লেখ্য, ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *