চিঠি নিয়ে নতুন বিতর্ক বরিশাল নগর বিএনপিতে

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : বিতর্ক পিছু ছাড়ছেনা বরিশাল মহানগর বিএনপিতে। গতবছর ৩ নভেম্বর আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর একের পর এক ঘটনায় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতবিরোধ ও অসন্তোষ প্রকাশ্যে হচ্ছে। সর্বশেষ গত বুধবার মহানগরের আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বরাবরে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিনের একটি চিঠি নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

বরিশাল বিএনপিতে ৩ দশকের একক আধিপত্যের নেতা যুগ্ন মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বিরোধীদের পদায়ন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠনে শিরিন অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে। এরপর থেকে সরোয়ার অনুসারীরা ভিন্ন প্লাটফর্ম করে শক্ত অবস্থানে আছেন। এরই মধ্যে বিলসিক জাহান শিরিনের চিঠিতে আহ্বায়ক কমিটির সঙ্গে তার সম্পর্কের দুরত্বেরও বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো।

শিরিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরের ওয়ার্ড কমিটি গঠনের জন্য গঠিত ৭টি সাংগঠনিক টিমে সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুলের স্বাক্ষর গ্রহন না করা এবং সদস্য আফরোজা খানম নাসরিনকে সংগঠনিক টিমে না রাখায় আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করার ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছেন। নগরের ৩০টি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের জন্য গত ২৬ নভেম্বর রাতে ৭টি সাংগঠনিক টিম প্রকাশ করেছে নগর আহ্বায়ক কমিটি।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগরের সদস্য সচিব অ্যাডভোকে মীর জাহিদুল কবির বলেন, ‘সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন এ চিঠি দেয়ার এখতিয়ার রাখেন না। মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব সাংগঠনিক যেসব চিঠি দেন তাতে যেকোন আদেশ-নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশের বরাত দেয়া হয়। শিরিনের দেয়া চিঠিতে তা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি কারো প্ররোচনায় পড়ে এ কাজ করেছেন’।
সদস্য সচিব জাহিদ বলেন, হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। চিঠির বিষয়ে জানতে আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুককে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি সারা দেননি।

এ বিষয়ে বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, বিষয়টি সাংগঠনিক। সাংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে দলীয় সমস্যা সমাধান করবেন। এসব নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন না। তিনি উম্মা প্রকাশ করেন, ওই চিঠি কিভাবে মিডিয়ার কাছে গেলো।

গত ২৬ জুন ৭টি সাংগঠনিক টিম প্রকাশের পর সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল বলেন, ‘কোথায় কিভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে আমি জানিনা। তারেক জিয়ার নির্দেশ রয়েছে, সাংগঠনিক সকল কাগজপত্রে আমার স্বাক্ষর গ্রহনের। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব প্রয়োজন মনে করছেন না তাই স্বাক্ষর নিচ্ছেন না’। এ প্রসঙ্গে সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, শুধুমাত্র ওয়ার্ডের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়কের স্বাক্ষর নেয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ রয়েছে।

টিমে না রাখার অভিযোগ জানিয়ে সদস্য আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, এ পর্যন্ত আমি ৯ বার গ্রেপ্তার হয়ে মোট ৩ বছর জেল খেটেছি, ৩৭টি মামলার আসামী হয়েছি। যাদের টিম লিডার করা হয়েছে তারা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগের ১০ বছরে দলীয় কোন কার্যক্রমে ছিলেন না। ওয়ার্ড নেতাদের ঠিকমতো চেনেননও তারা।

নাসরিন বলেন, টিমে না রাখার কারন জানতে চাইলে তাকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বলেন, ‘তুমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে নালিশ করেছো। সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে দাও’।

এসব বিষয়ে গত সোমবার (২৭ জুন) মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক  বলেন, কয়েকদিন আগে তার বাসায় যুগ্ন আহব্বয়কের নিয়ে সভা করে সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়। সভায় আলী হায়দার বাবুল অনুপস্থিত থাকায় তার স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। তার বাসায় সভা করা নিয়ে মিডিয়ার কাছে বিরূপ মন্তব্য করে সাংগঠনিক নিয়মভঙ্গ করেছেন বাবুল। আফরোজা খানম নাসরিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার আচরন উশৃঙ্খল। সিনিয়রদের সম্মান দেন না। কারনে-অকারনে কেন্দ্রে নাশিল দেন। মিয়িার কাছে তথ্য ফাঁস করেন। এসব কারনে বেশীরভাগ সদস্যর সাংগঠনিক টিমে রাখার বিপক্ষে ছিলেন। ফারুক জানান, সাংগঠনিক টিম আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *