স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার দুই হাতের রগ কেটে দিয়েছে প্রতিপক্ষ

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীন বিরোধের জেরে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরে রাতুল চৌধুরী (২৮) নামক এক যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়েছে প্রতিপক্ষরা। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় পৌর শহরের চরহোগলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আশংকাজনক অবস্থায় রাতুলকে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেহেন্দিগঞ্জে আওয়ামীলীগ দলীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ অনুসারী ও তার বিরোধীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। উপজেলা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন খান জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের অনুসারী সন্ত্রাসীরা রাতুলকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে। দুইদিন আগে সন্ত্রাসীরা ঢাকায় এমপির সঙ্গে বৈঠক করে রাতুলের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। কামাল উদ্দিন জানান, রাতুল এলাকায় এমপি পংকজ বিরোধী গ্রুপের একজন কর্মী। সে পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারন সম্পাদক।

পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে রাতুল চৌধুরী পাতারহাট বন্দরের উত্তরের বাজারে একটি ফার্নিচারের দোকানে বসা ছিল। এসময় এমপির সমর্থক আমু, বাঘা পলাশ, রিয়াজ, কালাম, মেহেদিসহ অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ওই দোকানে হামলা করে। তারা কুপিয়ে রাতুল চৌধুরীর দুই হাতের রগ কেটে দিয়েছে এবং মাথাসহ শরীরের একাধিক স্থানে নির্মমভাবে কুপিয়েছে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, রাতুলকে প্রথমে বরিশাল মেডিকেলে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা ১টায় জাহাঙ্গীর সমকালকে বলেন, রাতুলের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি জানান, এর আগে ২০০০ সালে একই সন্ত্রাসীরা রাতুলকে বাড়ি থেকে অপহরন করে আধাকিলেমিটার দুরে নিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়েছিল।

সাংসদ পংকজ দেবনাথের অনুসারী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলু বলেন, চরহোগলা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাতুল চৌধুরীর সঙ্গে স্থানীয় আমু-বাঘা পলাশ-রিয়াজ গ্রুপের বিরোধ রয়েছে। সোমবার সন্ধার পর আমু-রিয়াজ গ্রুপের মেহেদী নামক এক যুবককে কুপিয়েছে রাতুল ও তার সহযোগীরা। এর পাল্টা প্রতিশোধ হিসাবে রাতুলের ওপর হামলা হয়। খোরশেদ আলম দাবী করেন এ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পৃক্তা নেই। তবে আমু-রিয়াজ সাংসদ পংকজ দেবনাথের সমর্থক বলে স্বীকার করেন খোরশেদ আলম।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলুর দেয়া তথ্য মিথ্যা জানিয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার রাতে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেনি। একপক্ষ রাতুল নামক এক যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়েছে। ওসি জানান, হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের পক্ষ-বিপক্ষ ঘিরে মেহেন্দিগঞ্জে আওয়ামীলীগের দুইপক্ষ সারাবছরই মুখোমুখি অবস্থানে থাকেন। এমপি বিরোধীরা জেলা আওয়ামীলীগের সমর্থক হিসাবে পরিচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *