দক্ষিণাঞ্চলের ২০ নদীর ৪৩ পয়েন্ট খনন করা হচ্ছে

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : নদীর নাব্য স্বাভাবিক রাখতে দক্ষিণাঞ্চলে ২০টি নদীর ৪৭টি পয়েন্ট খনন করা হবে। এতে পলি উত্তোলন করা হবে মোট ৩০ লাখ ঘণমিটার। রোববার বরিশাল নৌবন্দরে নৌযান মালিক-শ্রমিক ও সংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ সংরক্ষন ও পরিচালনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল মতিন সরকার বলেন, আজ সোমবার বরিশাল নদীবন্দরে খনন কাজ শুরু হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারীর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদীর খনন সম্পন্ন হবে।

সভায় জানানো হয়. চলমান শীত মৌসুমে নৌযান চলাচল নির্ভিগ্ন করতে দক্ষিনাঞ্চলের নদনদীতে নাব্য হারানো পয়েন্টগুলো খনন করা হবে। উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট হচ্ছে- কীর্তনখোলা নদীর বরিশাল নৌবন্দর (একতলা ও দ্বিতলা লঞ্চঘাট), বরিশাল স্টীমারঘাট, সাহেবেরহাট চ্যানেলের টুঙ্গিবাড়িয়া ও লাহারহাট, তেতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া, মেঘনা নদীর মেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাট লঞ্চঘাট, পশ্চিম ইলিশা, ভোলার নালা, খেয়াঘাট, পটুয়াখালীর কারখানা নদী, কলাগাছিয়া, খেপুপাড়া লঞ্চঘাট, পায়রা নদী সংলগ্ন ধুলিয়া নালা, গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি লঞ্চঘাট ও কোড়ালিয়া, আমতলীর উপজেলার সুবিদখালী নালা, গাবখান চ্যানেলের মুখ, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার হলতা বন্দর সংলগ্ন নদী, নেয়ামতি লঞ্চঘাট এবং বানারীপাড়া লঞ্চঘাট।

মতবিনিময় সভায় লঞ্চ মালিক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট বন্দর সংলগ্ন মাসকাটা নদীতে খনন কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেখানে নৌকায় চড়ে যাত্রীদের মাঝ নদীতে এসে লঞ্চে ওঠতে হয়। অপর লঞ্চ মালিক স্বপন খান বলেন, নদী খননে লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের মতামত নেয়া হয়না। যে কারনে যথাযথ স্থান চিহিৃত করে খনন হচ্ছেনা। কীর্তণখোলায় নাব্য সংকট থাকায় অতি জোয়ার ও বৃষ্টিতে বরিশাল নগর প্লাবিত হচ্ছে।

নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ আবুল হাশেম বলেন, সঠিকভাবে সার্ভে না করায় প্রতিবছর নদী খনন করার পরও মানুষ সুফল পাচ্ছেনা। যে কারনে কতটুকু গভীরতায় নদী খনন হচ্ছে তা নিয়ে নৌযান মালিক-শ্রমিকরা সন্দিহান।

ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ এমভি সুন্দরবন- ১৬ এর মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, বরিশাল নৌবন্দরসহ বরিশাল-ঢাকা রুটের ৪টি পয়েন্ট যথাক্রমে নলবুনিয়া-বামনিরচর, হিজলা-বাবুগঞ্জ, উলানীয় থেকে মেঘনা পর্যন্ত খনন করা প্রয়োজন।

সভায় বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ভুইয়া বলেন, তারা সার্ভে করে দক্ষিনাঞ্চলে নদনদীর ৪৭টি পয়েন্ট খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরই মধ্যে বরিশালে ১১টি ড্রেজার আনা হয়েছে। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পলি উত্তোলন করা হবে।

এরমধ্যে বরিশাল নৌবন্দরে ১ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারন করা হবে। তিনি বলেন, স্থান না পাওয়ায় নৌবন্দর সংলগ্ন কীর্তনখোলার পলি আবার নদীর গভীরে ফেলবেন।

তিনি মাস্টারদের নানা প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাতারহাটের খনন এলাকায় নদী ভাঙনের কারন দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড্রেজিং বন্ধ রেখেছেন। এ বিষয়ে জেলাপ্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় হচ্ছে। কীর্তণখোলা ও কালাবদর নদীর সংযোগ সাহেবেরহাট চ্যানেল দ্রুত খনন করা হবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদরে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক কাজী ওয়াহিদুজ্জামান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আবু সাঈদ, বরিশাল বিভাগীয় লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশনের সভাপতি মাস্টার আবুল হাসেম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বরিশাল নদী বন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *