নাগরিক রিপোর্র্ট : দেশের বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পর পর দুটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে শীর্ষ দুটি পদ পেলেন বরিশাল নগরের দুই সন্তান। মঙ্গলবার রাতে ঘোষিত কমিটিতে সাধারন সম্পাদক হয়েছেন বরিশাল নগরের জর্ডান রোডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শেখ আব্দুর রবের ছেলে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। তার বাবা রব ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বৃহত্তর বরিশাল জেলা (বর্তমান বরিশাল বিভাগ) ছাত্রলীগের সভাপতি ও সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক।
মঙ্গলবার নতুন কমিটি ঘোষণার আগে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান জয়’ও বরিশাল নগরের বৈদ্যপাড়া এলাকার সন্তান। ধারাবাহিক দুটি কমিটির শীর্ষ পদধারী বরিশাল নগরের সন্তান হওয়ায় স্থানীয় রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উচ্ছ্বাস চলছে। শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানানোসহ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। প্রসঙ্গত, দেশের আরেক বৃহৎ ছাত্র সংগঠন জাতীয়বাদী ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের বাড়িও বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা গ্রামে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের নতুন সাধারন সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের পৈত্রিক নিবাস ঝালকাঠী সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নে। তবে তার জন্ম এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপাড়া বরিশাল নগরে। তিনি স্কুলজীবন থেকে ছাত্রলীগ করলেও এখানকার কমিটিতে কখনও পদধারী হননি। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে লেখাপড়া শুরুর পর তিনি আওয়ামী আইন ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০১২-১৬ পর্যন্ত পর্যন্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। একই সময়ে স্যার এফ রহমান হলের ক্রীড়া সম্পাদক হন। এরপরে ধাপে ধাপে হল ও একাধিক কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকীয় পদে ছিলেন। সদ্য সাবেক জয়-লেখক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন শেখ ওয়ারী আসিফ। মঙ্গলবার ঘোষিত কমিটিতে সংগঠনের শীর্ষ আসনে পদায়ন হন তিনি।
ৎ
সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোর্শেদ আলম মিরাজ বলেন, ‘আমি মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য থাকাবস্থায় জেলা স্কুলের ছাত্র ইনানকে ছাত্রলীগে যুক্ত করি। ২০০৯ সালে এসএসসি পাশের পর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে নিয়মিত নগর ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশে অংশগ্রহন করতো সে’। মিরাজ বলেন, একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় ছোটবেলা থেকে তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। সে অত্যন্ত মেধাবী। তার শ্রমই এখানে নিয়ে এসেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী আবরার সামিট বলেন, ‘ইনান ভাই অল্পদিন দিন বরিশালে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী। তাকে সংগঠনের শীর্ষ পদে আসীন করায় তূনমূল কমিটি গঠনে ছাত্রলীগের ত্যাগী-মেধাবীরা মুল্যায়িত হবেন আশাবাদ তাদের।
বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটিতে বরিশাল আবারও গুরুত্বপূর্ন পদ পাওয়া আমাদের জন্য মাইল ফলক হয়ে থাকবে। সদ্য সাবেক সভাপতি জয় ও নতুন সাধারন সম্পাদক দুজনই বরিশাল জিলা স্কুলের ছাত্র ছিল। রাজ্জাক বলেন, এর আগে বরিশালের যারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন, তারা পরবর্তীতে জাতীয় নেতা হয়েছেন। জয়-ইনানও একদিন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করবেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্র সংগঠনকে সু সংগঠিত করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব বেশ শক্তিশালী হয়েছে বলে মত দেন রাজ্জাক।
প্রসঙ্গত এর আগে এর আগে বরিশালে আরও দুজন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ছিলেন। নগরের বটতলা এলাকার বাসিন্দা ্আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘৭৫ ট্রাজেডির পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন এবং ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন বরিশাল- (বানারীপাাড়া-উজিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলম তালুকদার।##