নাগরিক রিপোর্ট : জ্বালানী হিসাবে সিলিন্ডারে ব্যবহৃত লিকুইড প্রেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) তীব্র সংকট চলছে বরিশালে। প্রায় ১ মাস যাবত এই সংকট চলছে বলে জানা গেছে। নগরজীবনে রান্নায় নিত্যপণ্য হিসাবে এটি ব্যবহৃত হয়। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে সিলিন্ডার পাচ্ছেন না ক্রেতারা। সংকটের অজুহাতে ১ মাসে তিনদফায় প্রতি সিলিন্ডারে দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এ সপ্তাহে আরও একদফা দাম বাড়বে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল রোববার ১২ কেজি গ্যাসের একটি সিলিন্ডার খুচরা বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। পনের দিন আগে এর দাম ছিল ১ হাজার ৩৫০ টাকা। পাড়া-মহল্লায় খুচরা বিক্রির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সিলিন্ডার দিতে পারছেন না বিক্রেতারা।
বেসরকারী এলপিজি কোম্পানীর স্থানীয় পরিবেশকরা সংকটের কথা স্বীকার করে বলেছেন, তারাও চাহিদা অনুযায়ী কোম্পানী থেকে সরবরাহ পাচ্ছেন না। ফলে খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহ করতে পারছেন না তারা। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে।
তবে কেন এই সংকট তার সুনির্দিষ্ট সদুত্তর পাওয়া যায়নি। একাধিক পরিবেশক তাদের নিজ নিজ কোম্পানীর বরাত দিয়ে সমকালকে, এটা আন্তর্জাতিক সংকটের প্রভাব। কোম্পানীগুলো চাহিদা অনুযায়ী বিদেশ থেকে এলপিজি আমদানী করতে পারছেন না। ডলার সংকটের কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
নগরের ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার খুচরা বিক্রেতা জহিরুল ইসলাম জানান, প্রায় এক মাস ধরে সিলিন্ডার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন কোম্পানী। এরমধ্যে বসুন্ধরা, ডেলটা, ফ্রেশ, এনার্জী প্যাক (জি), বেঙ্গল, নাভানা নামক কয়েকটি কোম্পানীর সরবরাহ নেই প্রায় গত ১৫ দিন যাবত।
গোঁড়াচাঁদ সড়কের আরেক বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, স্থানীয় পরিবেশকরা আগাম জানিয়েছে দিয়েছেন যে ফেব্রুয়ারীর শুরুতেই আবারও দাম বাড়বে।
বসুন্ধরা কোম্পানীর পরিবেশক মো. রাসেল বলেন, কোম্পানী থেকে তাকে জানানো হয়েছে তাদের একটি জাহাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় এলপিজি আনতে পারছেন না। যে কারনে সারাদেশে পরিবেশকদের সরবরাহ সীমিত করা হয়েছে। বরিশালের বাজারে বসুন্ধরা সিলিন্ডার নেই- এ তথ্য সঠিক নয় জানিয়ে রাসেল বলেন, ‘কোম্পানী থেকে যেভাবে পাচ্ছি সেভাবে খুচরা বিক্রেতাদের সেভাবে সরবরাহ করছি।
অরিয়ন কোম্পানীর পরিবেশক তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি কোম্পানীর কাছে ২১২টি সিলিন্ডারের অর্ডার দিয়েছিলেন। রোববার তাকে দেয়া হয়েছে মাত্র ৪১টি। সব কোম্পানীর পরিবেশকদের একই অবস্থ। ফলে তারা খুচরা বিক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সিলিন্ডার দিতে পারছেন না।
লার্ফাস কোম্পানীর পরিবেশক মো: রুবেল হোসেন বলেন, কোম্পানী এলসি করে পন্য আনতে পাড়ছে না। যেকারনে গ্যাসের দাম অসম্ভব বাড়তি। ১২-১৪টি কোম্পানী বরিশালের পরিবেশকদের সরবরাহ বন্ধ রেখেছে।
যমুনা কোম্পানীর পরিবেশক মো: শাহিন বলেন, তাদের কোম্পানী প্রায় ১মাস যাবত সিলিন্ডার সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। ডলার সংকটে এলসি করতে না পারায় কোম্পানী এই সংকটে পড়েছে।##