নাগরিক রিপোর্ট : বরিশাল নগরের সবচেয়ে বড় হকার্স মাকের্ট ‘হাজী মোহাম্মদ মহসীন মার্কেট’র দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির নতুন সভাপতি হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান। নতুন কমিটির পরিচিতি সভা করতে ব্যবসায়ীদের কাছ প্রায় ৪ লাখ টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নেয়া হয় দেড় হাজার টাকা। এনিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার মার্কেটের ভেতরে নতুন কমিটির পরিচিত সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন সিটি মেয়র ও মহানগর আওযামী লীগের সাধারন সম্পাদক সেরনিযাবাত সাদিক আবদুল্লাহ। ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মিজান নগর রাজনীতিতে মেয়র অনুগত হিসাবে পরিচিত।
মহসীন মার্কেটে ৪০ নম্বর স্টলের ব্যবসায়ী বাবু ননী গোপাল। তিনি বলেন, নতুন কমিটি মার্কেটে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে আনবেন। এজন্য প্রতিটি দোকান থেকে দেড় হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। ননী গোপাল বলেন, ‘এর আগে কখনও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এত পরিমান চাঁদা নেয়া হয়নি। আমরা গরীব দোকানদার। এই টাকা দিতে আমার বুক ফেটে গেছে’। মার্কেটের সভায় বলাও হয়নি কত টাকা করে দিতে হবে। মোস্তাক, মজিবর, নাসির মিয়ার পুত্ররা এসে সবার কাছ থেকে চাঁদা তুলেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মেয়রকে স্বাগত জানাই, কিন্তু তার আগমন দেখিয়ে চাঁদা তোলায় মেয়রের ভাবমুর্তি এক শ্রেনীর লোক নস্ট করছেন।
৫১ নম্বর স্টলের ব্যবসায়ী মো: শাহিন বলেন, মেয়র আসবেন তাই, আপ্যায়ন বাবদ দেড় হাজার টাকা করে চাদাঁ নিয়েছে কমিটির নেতারা। তবে ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভায় দেড় হাজার টাকা নেয়া হবে- এমন কথা বলা হয়নি।
চাঁদা তোলার দায়িত্বে ছিলেন ব্যবসায়ী সমিতির নবাগত সাধারন সম্পাদক মোস্তাক হোসেন ঢালী। তিনি বলেন, আমাদের মার্কেটে মেয়র আসবেন, এজন্য নানা আয়োজন রয়েছে। মেহমান ও ব্যবসায়ীদের আপ্যায়ন করা হবে। তাছাড়া আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে অনুদান দিতে হবে। তাই সব খরচ বাবদ স্বতস্ফুর্তভাবে দেড় হাজার টাকা চাঁদা নির্ধারন করা হয়।
মার্কেটের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নানা অভিযোগে পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে সিটি মেয়রের অনুগত মিজানুর রহমানকে নেতৃত্বে আনা হয়েছে। সাবেক সভাপতি শেখর দাসকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহনের শুরুতেই মিজান মেয়র আর ডিসি অফিসের নাম ভাঙ্গিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলেছেন।
এ প্রসঙ্গে সভাপতি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠান করার জন্য ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে চাঁদা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিটি ঘর মালিক ১হাজার ও ভাড়াটিয়া ৫০০ মোট দেড় হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। মার্কেটে মোট ২৪০টি দোকান রয়েছে। কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা নেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ কেউ দিতে পারবেন না। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে ১ হাজার ২০০ জনকে আপ্যায়ন করা হবে। এজন্য ২টি গরু কিনেছেন।