আমতলী হাসপাতালে পানি সরবরাহ বন্ধ, দুভোর্গে রোগীরা

Spread the love

আমতলী সংবাদদাতা:
আমতলীর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পানি সরবরাহের বৈদ্যুতিক মটার নষ্ট হওয়ায় ৪দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ৪দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী এবং তাদের সাথে আসা স্বজন ও আাবাসিক ভবনে বসবাসরত ডাক্তার এবং নার্সরা পরেছে মহা বিপাকে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার ৫০ শয্যার হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহের জন্য ১ বছর আগে একটি নতুন মটার বাসানো হয়। মটারটি ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে আকস্মিক ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

এর পর থেকে ২৬ আগস্ট শনিবার পর্যন্ত ৪ দিন ধরে আমতলী হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আমতলী হাসপাতালে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৪৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন রয়েছে ডেঙ্গু রোগী। বিপুল পরিমান রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকলে ৪দিন ধরে হাসপাতালে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগী এবং তাদের সাথে আসা স্বজনরা পড়েছে মহা বিপাকে। পানির অভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়রা রোগীদের গোসল করা এবং শৌচাগার সারা দুরহ হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে শৌচাগারে ময়লার পাহার জমে এখন আর কউ যেতে পারছেন না। পানির অভাবে দুর্গন্ধের কারনে শৌচাগারের ধারে কাছেও যেতে পারছেন না কেউ। রোগী এবং তাদের সাথে আসা স্বজনরা আশপাশের বাসাবাড়ি কিংবা স্বজনদের বাসাবাড়িতে গিয়ে গোসল এবং শৌচাগার সারছেন।

শনিবার দুপুরে হাসপাতাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রোগী এবং স্বজনরা বালতি এবং পানির বোতল ভরে বাহিরের গভীরনলকুপ থেকে পানি নিয়ে আসছেন। আনেক রোগী আবার বাহিরে গিয়ে গোসল ও সৌচাগারের কাজ সেরে আসছেন। এসময় রোগীর সাথে আসা আলেয়া নামের এক স্বজন বলেন, গভীর নলকুপ থেকে পানি ভরে চার তলায় নিয়ে ওঠা খুব কষ্টকর। এভাবে আর পারা যায় না।

ডেঙ্গু জরে আক্রন্ত মেহেদি হাসান বলেন, ভাই চার দিন ধরে গোসল করতে পারছি না, শৌচাগারে যেতে পারছি না। শহরের কোন এক দুরসম্পর্কের আত্মীয়রে বাসায় গিয়ে গোসল এবং শৌচাগার সেরে আসি। আব্দুল জব্বার নামে ষাটোর্ধ এক রোগী বলেন, ভাই বয়সের কারনে এমনিতেই ঠিকমত হাটতে পারি না তার উপর ডেঙ্গু জ্বর। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর এখানে পানি নাই। না পারছি গোসল করতে না পারছি শৌচাগারে যেতে। এখন আমাদের হয়েছে মরন দশা।

হাসপাতালের আবাসিক ভবনে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বসবাসরত চাকুরি জীবিরা পরেছে মহাবিপদে। এখানে একটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মকর্তাতাদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক ভবন। এসকল ভবনে বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারীরা পানির অভাবে তারা ঠিকমত গোসলসহ সাংসারিককাজ করতে পারছে না।
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে বসবাসরত নার্স রেভা, সালমা, মোর্শেদা, আখি বলেন, হাসপাতালের পানি তোলার পাম্প মেশিনটি নষ্ট থাকায় এখন আমরা নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পাই না। বিকল্প ভআবে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা দিয়ে আমাদের সাংসারিক কাজের জন্য রান্না বান্না এবং ধোয়া মোছাসহ বাসা ঠিক ভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা জায় না। বর্তমানে প্রচন্ড গরমে পানির অভাবে খুই কষ্টে আছি।

আমতলী ৫০ শয্যা হাসপতালের পানি সরবরাহের জন্য ২০২২ সালের প্রথম দিকে ৮-৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে একটি বৈদ্যুতিক মটার বসানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, ঠিকাদার স্বাস্থ্য প্রকৌশলীর যোগসাজসে কম মূল্যের এবং নিম্ম মানের একটি বৈদ্যুতিক মটার বসানোর কারনে ১ বছরের মাথায় সেটি নষ্ট হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পটুয়াখালীর উপসহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত হালদার বলেন, কি কারনে মটারটি নষ্ট হয়েছে তা জানি না তবে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিম্নমানের মটার বসানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ভালো মানের মটার বসানো হয়েছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, হাসপাতালে ৪দিন ধরে পানি তোলার বৈদ্যুতিক মটারটি নষ্ট হওয়া পানির সমস্যা প্রকট আকার ধারন করেছে। সমস্যা সমাধানের জন্য সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। আশা করি আজ কালের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *