মেয়র সাদিকের ছবি নামানোয় জুতার মালা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি ব্যক্তিগত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে নামিয়ে ফেলার জেরে জুতার মালা পড়িয়ে হেনস্থা করেছে তার অনুসারীরা। ওই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় হেনস্তার শিকার ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গত কদিন ধরে জুতার মালা পড়িয়ে হেনেস্তা করার এমন ভিডিও সর্বত্র ভাইরাল হয়। গতকাল সোমবার ঘটনার শিকার ব্যক্তির পরিচয় ও মামলা দায়েরের খবর প্রকাশ পায়।
কোতয়ালী মডেল থানায় গত ২৫ আগস্ট দায়েরকৃত এজাহারের তথ্যমতে, মামলার দুই আসামী হচ্ছে- নগরের শীতলাখোলার নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার এবং মো: সোহাগ। আসামী নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শোনা গেছে- বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়ে রাখার শাস্তি হিসেবে গলায় জুতার মালা পড়ানো হয়েছে। ভিডিওতে ওই ব্যবসায়ীকে বলতে বাধ্য করা হয় যে তিনি সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি দোকান থেকে নামিয়ে রাখায় অন্যায় করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসান জানান, এ ঘটনা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে।

হেনন্তর শিকার মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু একই উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নগরের ১১ নং ওয়ার্ডের সোনার বাংলা মটরসের স্বত্ত্বাধিকারী।

বাচ্চু বলেন, ঘটনার মুল হোতা নাজমুল হাসান মঈনের বাড়িও চরামদ্দি ইউনিয়নে। তার দোকান থেকে একটি মোটরসাইকেল বাকিতে নিশে চায় মঈন। মোটরসাইকেল না দেওয়ায় তার ওপর ক্ষুব্দ হয়। গত ২২ আগষ্ট দুপুরে তাকে প্রয়োজনীয় কথা শোনার জন্য কালুশাহ সড়কে শহীদ আব্দুর রহিম ক্লাবে ডেকে নিয়ে যায় মঈন। সেখানে যাওয়ার পর দোতালায় একটি কক্ষে আটকে রেখে বেদম মারধর করেছে মঈন ও তার ৪ সহযোগী।

মারধর শেষে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে তাকে বলতে বাধ্য করা হয়, ‘সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র পদে মনোনয়ন না পাওয়ায় তার ছবি দোকান থেকে নামিয়ে ফেলেছে। এজন্য তাকে জুতার মালা পড়ানো হয়েছে। বাচ্চু জানান, মারধরকারীরা বলে যখন তখন টাকা চাইলে না দিলে ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ঘটনার পরদিনই প্রদীপ নামক একটি আইডি দিয়ে ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় মারধরকারীরা।

বাচ্চু অভিযোগ করেন, ক্লাব থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই তিনি কোতোয়ালী থানায় গিয়ে তখন নাম জানা দুইজনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দেন।

তবে মামলার আসামী নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, বাচ্চুর জুতার মালা পরানোর যে ভিডিও এর সঙ্গে আগের ভিডিওর সম্পৃক্ততা নেই। ওখানে সাদিক আব্দুল্লাহর নাম বলা আমার উচিত হয়নি। এজন্য সাদিক ভাইও আমার ওপরে খুব ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এটা আমি ভুল করেছি।

এব্যপারে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন এ তথ্য স্বীকার করে বলেন, জুতার মামলা পড়ানোর ঘটনায় ঘটনার শিকার ব্যাক্তি থানায় অভিযোগ দিলে আমরা সেটি মামলা আকারে গ্রহন করেছি। কেননা এজাহারের ২ আসামী বাদী মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু তাকে মারধর এবং হেনস্থা হয়েছে। এ ঘটনা ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিনি মামলা দায়ের করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *