নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশালের বাকেরগঞ্জের জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পিকনিকের অনুষ্ঠানে আনন্দ ফুর্তি করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ধাওয়া খেয়ে জাবের হাওলাদার (১৬) নামে এক ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রাতে দৌড়ে পালাতে গিয়ে ওই ছাত্র পড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। এ ঘটনার ১০দিন পর রোববার রাতে জাবেরের মৃত্যু ঘটে। জাবের গোমা গ্রামের লঞ্চ কর্মচারী আঃ কালাম হাওলাদারেরর পুত্র। এর জেরে গতকাল সোমবার সকালে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
নিহত জাবেরের মামাত ভাই আ: আজিজ খান লাভলু বলেন, গত ১৭ আগস্ট গোমা বাজারের ব্রিজের উত্তর পাশে জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেনীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠান শেষে রাতে পিকনিক এর আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা। তাতে দুস্টামী করায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব মোল্লা ধাওয়া দেন ছাত্রদের। পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায় জাবের নামে নিহত ছাত্র। তাকে ওই সময় শেবাচিম হাসপাতালে ভতি করলেও স্মৃতিশক্তি ফেরেনি এবং কথা বলতে পারতো না। একপর্যায়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে।
লাভলু বলেন, গত রোববার রাতে জাবের অসুস্থ হয়ে পড়লে ফের অ্যাম্বুলেন্স যোগে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে তার স্কুল ও এলাকায় গতকাল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামানবলেন, গত ১৭ আগস্ট দুপুরে ছাত্রদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুস্ঠানের পর রাতে ছাত্ররা স্কুল মাঠে পিকনিকের আয়োজন করে। এজন্য তারা সাউন্ড বক্স বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস করে। এক পযায়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসে ছাত্রদের ধাওয়া দিলে নিহত জাবের পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারালে বুকে ব্যাথা পায়। ওই ঘটনার পর জাবেরকে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা দিলেও সে সুস্থ হয়ে ওঠেনি। রোববার রাতে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর জেরে গতকাল মঙ্গলবার ছাত্ররা স্কুলে এসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এসময় তারা জাবেরের মৃত্যুর বিচার দাবী করেছে।
তবে জেপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব মোল্লা বলেন, ছাত্ররা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর পিকনিক খেতে চাইলে তাদের দুপুরে বিরিয়ানি খাওয়ানো হয়। রাতে তারা বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে উচ্চ শব্দে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে আনন্দ ফুতি করছে। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বক্স বাজালে তিনি গিয়ে ওই বক্স নিয়ে আসেন। এসময় হেড স্যার আসছে, হেড স্যার আসছে – এমন আওয়াজ দিয়ে ওই ছাত্ররা দৌড়ে পালায়।
প্রধান শিক্ষক দাবী করেন, এলাকাবাসী অভিযোগ দলে তিনি গিয়ে বক্স জব্দ করেছেন মাত্র। পরে তিনি শুনতে পান জাবের অসুস্থ। গতকাল রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে মেডিকেলে পাঠানোরও ব্যাবস্থা করেছেন তিনি। জাবেরের মৃত্যুর জন্য তার কোন দায় থাকতে পারে না বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব।
এব্যপারে বাকেরগঞ্জের শর্ষী তদন্ত কেন্দ্রের এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, পিকনিকে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে হৈচৈ করলে প্রধান শিক্ষক বারন করেছিলেন। ওই সময় ছাত্ররা ছুটি চলে যেতে গেলে একজন আঘাত পায়। পরে ওই ছাত্র মারা যায়। এ ঘটনায় বাকেরগঞ্জ থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।