নাগরিক রিপোর্ট:
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) আওতাধীন কাউনিয়া আবাসিক প্রকল্প-২ এর প্লট বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মকর্তাসহ তাদের অনুসারীদের নামে-বেনামে এ প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালত প্রকল্পের কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা জারি করলেও তা মানছে না সিটি করপোরেশন। এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে নগরীর কাউনিয়া আবাসিক প্রকল্পের পাশে এই কর্মসূচি করেন স্থানীয় জনসাধারণ।
সমাবেশে বর্তমান প্লট বরাদ্দ কার্যক্রম বন্ধ করে লটারীর মাধ্যমে তা বরাদ্দের দাবি জানান স্থানীয়রা। পাশাপাশি অবিলম্বে হাউজিং প্রকল্পের মাস্টারপ্লান-নকশা প্রকাশ, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ, সড়ক নির্মাণের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বিশ্বাস, স্থানীয় বাসিন্দা শাজহাজান শিরাজ, গাজী মকবুল হোসেন, আউয়াল মোল্লা, বাবুল হোসেন ও আবদুল আজিজ হাওলাদার, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, এই আবাসিক প্রকল্পের জমি বিনা পয়সায় অধিগ্রহণের কারণে ভূমি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এরপর ২৪০টি প্লট বরাদ্দের জন্য সিটি করপোরেশন ২০২১ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর জেলার হাজার হাজার মানুষ তিন হাজার টাকা করে দিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছে। সেই প্লটের কোন মাস্টারপ্লান বা নকশাও করা হয়নি। অধিগ্রহণ করা জমির মালিকদের প্লট বরাদ্দের অগ্রাধিকার বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রকল্পের সড়ক, ড্রেনেজ ব্যবস্থাও করা হয়নি। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীদের না জানিয়ে লটারি ছাড়া প্লট বরাদ্দ দিয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা নিজেদের নামে একাধিক প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীদের অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে বিসিসির অসাধু কর্মকর্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্লট বরাদ্দ দেওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণের ক্ষতি সাধনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। সেই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত আগস্ট মাসের ২৯ তারিখে হাউজিং প্রকল্পের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থিতি অবস্থার আদেশ দেন। তারপরও আদেশ অমান্য করে ভূমিদস্য শ্রেণির লোকেরা হাউজিং প্রকল্পের পাশে সাধারণ জনগণের রেকর্ডীয় জমিসহ রাস্তার পাশের জমি দখলের জন্য বালু ভরাট করে দোকান-বাড়ি নির্মাণ করছে। এ কাজে সহায়তা করছে সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মচারীরা। এব্যপারে বিসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা সানজিদ হোসেন বলেন, প্লট বরাদ্দে কোন অনিয়ম হয়নি। নিয়ম মেনেই কাজ চলছে।
অপরদিকে বিসিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার রোহান জানান, তারা উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থার কোন আদেশ পাননি।