নাগরিক রিপোর্ট:
দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীরের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছেন দলটির একাংশের নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে টাউন হল পর্যন্ত শত শত নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মহানগর কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
সমাবেশে নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দেন। মিছিলে ‘জাহাঙ্গীরের চামড়া তুলে নেব আমরা, নগর কমিটি ভেঙে দাও’—এমন নানা স্লোগান দিতে শোনা গেছে।
নগর সভাপতি জাহাঙ্গীর গত ২৮ নভেম্বর শান্তি সমাবেশে সিটি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রশাসন দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরার কথাও বলেন। এ কে এম জাহাঙ্গীর বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর সহচর বলে জানান নেতা-কর্মীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশের বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফজালুল করিম বলেন, ‘জাহাঙ্গীর ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকেও বিতর্কিত করেছে। গত সিটি নির্বাচনও বিতর্কিত করতে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দিয়েছেন। জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মহানগর কমিটি থাকলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
আফজালুল করিম আরও বলেন, ‘আপনাদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে পারলে জিততে আসেন।’ তিনি মহানগর কমিটি ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে সিটি মেয়র খোকনের নেতৃত্বে নতুন মহানগর কমিটি গঠনের দাবি জানান।
মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আনিচ উদ্দিন শহীদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়ে ছেলের বিয়েতে পরিষদ থেকে টাকা ব্যয় করেছেন। তিনি বাস মালিক সমিতির সভাপতি হয়ে লুটপাট করেছেন। তাঁর মতো নৌকার বিরুদ্ধাচরণ ব্যক্তির হাতে মহানগর আওয়ামী লীগ নিরাপদ নয়।’
মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, ‘গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচন হয়েছিল ইভিএম পদ্ধতিতে। সেই নির্বাচন সম্পর্কে নগর সভাপতি জাহাঙ্গীর প্রশ্ন তুলেছেন। জাতীয় নির্বাচনেও প্রশাসন দিয়ে ব্যালট ভরার কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বরিশালের হাজার হাজার নেতা-কর্মী জাহাঙ্গীরের অপসারণ এবং মহানগর কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবিতে আজ সোচ্চার হয়ে উঠেছেন।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক হারুন, অ্যাড. লস্কর নুরুল হক, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম, শ্রমিক লীগ নেতা শাজাহান হাওলাদার, কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা অসীম দেওয়ান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন, মঈন তুষার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহীদ মিনার থেকে সদর রোড হয়ে অশ্বিনীকুমার হলের সামনে শেষ হয়।