বরিশালে ময়লা আবর্জনা, মশার যন্ত্রনা, ভঙ্গুর ড্রেনেজ ব‌্যাবস্থা, ব্যাহত নাগরিক সেবা

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট:
রাজ‌নৈ‌তিক পট প‌রিবর্তনের পর ব‌রিশাল নগরের ৩০‌টি ওয়া‌র্ডের অ‌ধিকাং‌শ এলাকার কাউন্সিলররা লাপাত্তা হ‌য়ে গে‌ছেন। যেকার‌নে ওয়া‌র্ডে ওয়ার্ডে নাগ‌রিক সেবা মারাত্নকভা‌বে ব‌্যাহত হ‌চ্ছে। বি‌শেষ করে মশার যন্ত্রনা, ভঙ্গুর ড্রেনেজ ব‌্যাবস্থা, জলাবদ্ধতা এবং ঢিলেঢালা বর্জ‌্য ব‌্যাবস্থাপনায় ভোগা‌ন্তি‌তে পড়‌ছেন নগরবাসী। সাধারন মানুষ মনে করেন, এ অবস্থা থেকে দ্রুত কাটিয়ে উঠতে দৃশ্যমান উদ্যোগ না নিলে বিপর্যায় দেখা দিতে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপু‌রে নগ‌রের নবগ্রাম রো‌ডের সার্কুলার রো‌ডের বিপরী‌তে দেখা গেল দেয়া‌লে লেখা র‌য়ে‌ছে- ‘এখা‌নে ময়লা ফেল‌বেন না।’ অথচ সেখানকার সড়কের উপ‌রে ময়লার স্তুপ জ‌মে আছে। নাক চে‌পে কোন রকম ওই এলাকা পেড়ু‌তেই অদু‌রে আইডিয়াল স্কুল এন্ড ক‌লে‌জের সাম‌নে প‌ড়ে থাকতে দেখা গেল গৃহস্থলি ময়লা। একইভাবে দ্বীনবন্ধু সেন সড়ক, বগুড়া রোড, টি‌টি‌সি, বিএম ক‌লেজ রোড, অক্স‌ফোর্ড মিশন স্কু‌লের বিপরী‌তে দিনদুপু‌রে প‌ড়ে আছে ময়লা আবর্জনা। কথা হয় পথচারী আঃ গ‌নি, রাজ্জাক হো‌সেন, ইয়া‌ছিন মিয়ার সঙ্গে। তারা ব‌লেন, আগে রা‌তে সড়কে ফেলা হ‌তো ময়লা। সেখান থে‌কে ট্রাক ভরে নেয়া হ‌তো ডা‌ম্পিং স্প‌টে। আর এখন দি‌নেও রাস্তায় প‌ড়ে থা‌কে ময়লা। এতে দুর্ঘন্ধের স‌ঙ্গে রোগ বালাইও ছড়া‌চ্ছে।

তবে সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিছন্নতা কর্মকর্তা মো: ইউসুফ আলী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সন্ধ্যার পড়ে ভ্যানগাড়িতে বিভিন্ন স্পটে ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। তারা রাতে এগুলো অপসারন করে। তিনি বলেন, এখন ড্রেনের ময়লা পরিস্কার করতে গিয়ে রাস্তায় কিছুটা পড়ে থাকতে পারে। তবে সারাদিন ময়লা আবর্জনা রাস্তায় পড়ে থাকতে পারে না। তিনি দাবী করেন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে কাউন্সিলররা ওয়াডে ওয়াডে না থাকলেও তারা তাদের রুটিন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দৈনিক ১৮০ থেকে ১৯০ টন বর্জ্য অপসারন করতে হয় নগর থেকে এমনটাই জানালেন পরিছন্নতা কর্মকর্তা ইউসুফ।

এদিকে টানা বর্ষায় একদিকে যেমন নগরের বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে তেমনি মশার যন্ত্রনায় অতিস্ঠ হয়ে উঠেঠে সাধারন মানুষ। যদিও এরই মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ‌শেবা‌চিম হপসপাতা‌লের তথ‌্যপ্রদানকারী জাকা‌রিয়া খান স্বপন ব‌লেন, হাসপাতা‌লে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৪ জন ভ‌র্তি আছে। এর ম‌ধ্যে ব‌রিশাল জেলায় ১০জন। সব‌চে‌য়ে বে‌শি রোগী আস‌ছে পি‌রোজপুর থে‌কে।

ইদানিং মশার উপদ্রব যেন কয়েকগুন বেড়েছে। বিশেষ করে নগরের পশ্চিম কাউনিয়া খালপাড়, জিয়ানগর, গোরস্তান রোড, কলেজ রোড, নিউ সার্কুলার রোড, মনসুর কোয়ার্টার, কালুশাহ সড়ক, মেডিকেলের পেছনে, রুপাতলি হাউজিং এলাকার একাধিক বাসিন্দা মশার উপদ্রব বৃদ্ধির অভিযোগ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ৫ জানুয়ারী সরকার পরিবর্তনের পর মশক নিধনে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দেখা যাচ্ছে না। কাউন্সিলরদেরও পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এই বর্ষার সময়ে মশার কামড়ে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, চর্মজাতীয় রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বি‌সি‌সির মশক নিধন বিভা‌গের দা‌য়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস ব‌লেন, বৃ‌ষ্টির কার‌নে ওষুধ ছেটা‌নো যায়‌নি। কিন্তু মঙ্গলবার থে‌কে গ্রুপ ভি‌ত্তিক কর্মীরা মশক নিধন কার্যক্রমে নেমে গে‌ছে। সরকার প‌রিবর্তনে ৫ আগ‌স্ট এনএক্স ভব‌নে যে আগুন ও লুটপাট হ‌য়ে‌ছে সেই সময় তা‌দের ১৫‌টি হ‌্যান্ড স্প্রে দু‌র্বিত্তরা নি‌য়ে গে‌ছে। বর্তমা‌নে ২০‌টি হ‌্যান্ড স্প্রে এবং ১০ট ফগার মে‌শিন দি‌য়ে কাজ চল‌ছে। নগ‌রের ৩০‌টি ওয়া‌র্ডে এতো স্বল্প সংখ‌্যক মে‌শিন দি‌য়ে মশক নিধন হয় কি না এ প্রস‌ঙ্গে তি‌নি ব‌লেন, ৯০‌টি হ‌্যান্ড স্প্রে এবং ৩০‌টি ফগার মে‌শিন কেনার জন‌্য ওয়ার্ক অর্ডার সম্পন্ন হ‌য়ে‌ছে। এগু‌লো কেনা হ‌লে মশক নিধন আরও জোরদার হ‌বে।

এদিকে নগররের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কার করতে গিয়ে সেই কাজ ফেলে রাখায় এখন ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিউ সার্কুলার রোড, গোরস্থান রোড, কালুশাহ সড়ক খালপাড় সহ বিভিন্ন স্থানের সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।
এসব বিষয়ে জানতে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেনকে ফোন দয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *