“রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেলেন মীর মোহাম্মদ আলী”

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট : “রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেলেন মীর মোহাম্মদ আলী” পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তনে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক (রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক) পেলেন মীর মোহাম্মদ আলী। মীর মোহাম্মদ আলী বর্তমানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের একোয়াকালচার বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার পূর্বেও ছিলেন ওয়ার্ল্ডফিশ নামের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক ও ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার এসোসিয়েশনের কনস্যালটেন্ট।

মীর মোহাম্মদ আলী খুলনা জেলার খানজাহান আলী থানার মীর তৈয়ব জংয়ের ছেলে। তিনি বাবা মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান। তিনি খুলনা জেলার খানজাহান আলী থানার, যোগীপোল গ্রামের বসবাস করেন। তিনি খুব আড্ডাপ্রিয় এবং ভ্রমন বিলাসী মানুষ, জীবনের উপার্জনের সিংহভাগ দিয়ে পৃথিবী ঘুরতে চান, পড়াশোনায় খুব একটা বেশী সময় নাহ দিলেও ক্লাসের গভীর মনোযোগ তাকে এনে দিয়েছে সকল সফলতা। বাবা-মা চেয়েছিল ডাক্তার বানাতে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ফাস্ট হওয়ার পর, আর মেডিকেলে পরীক্ষা দিতে যাননি। নতুন করে গুছিয়ে নিয়েছেন নিজেকে, চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় সেরা হওয়ার।

কযান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ থেকে প্রথন স্থান পেয়ে ২০১৩ সালে স্নাতক ও ২০১৫ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় তিনি তার অনুষদ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ নিয়ে প্রথম হন। তারই কৃতিত্বস্বরূপ তিনি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেলেন।

ইতিপূর্বে ২০১৭ সালের ২২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ রেজাল্টের জন্য তিনি পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৩। এর আগেও, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কৃতিত্বের জন্য স্নাতক পর্যায়ের চারটি লেভেলে ডিন মেরিট লিস্ট অ্যাওয়ার্ড, ইউনিভার্সিটি গ্রান্ড কমিশন বৃত্তি, ন্যাশনাল সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফেলোশিপ পেয়েছেন। এছাড়া তিনি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর মেধাবৃত্তি, বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি, আধা-সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি পেয়েছেন। মাধ্যমিক পর্যায়েও তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন, পড়াশুনার প্রতিটা ক্ষেত্রে-ই সর্বোচ্চ কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও মানবিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সাথে কাজ করেছেন। পড়াশুনা এবং গবেষণায় আগ্রহী মীর মোহাম্মদ স্নাতক পর্যায় থেকেই বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থা ও প্রফেসরদের সাথে গবেষণার কাজ করেন। বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নে তিনি কাজ করতে চান। ইতিমধ্যে তার ৪০ টির মতো গবেষণা প্রবন্ধ দেশি-বিদেশি অনেক নামকরা জার্নালে প্রকাশিত হয়। এছাড়া তার রয়েছে উপকূল অঞ্চলের কাঁকড়া ও কাঁকড়া চাষীদের নিয়ে লেখা গবেষণাধর্মী একটি বই। মাস্টার্সের সময় কাজ করেছেন নদী দূষণ এবং এর ফলে সম্ভাব্য মানবদেহের ঝুঁকি নিয়ে, এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশ করেছেন বিশ্বমানের জার্নালে।

তিনি মনে করেন জীবনে সফলতার জন্য প্রথমে প্রয়োজন একটি ভালো পরিকল্পনা এবং তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা। একটি সুন্দর পরিকল্পনা ও সংকল্পই এনে দিতে পারে জীবনের সফলতা। সাথে থাকতে হবে বাবা মায়ের দোয়া, তিনি বিশ্বাস করেন তার বাবা মায়ের দোয়াতেই তার আজ এতদূর আসা। তার মতে তার বাসার সবচেয়ে বড় চাকরীটি করেন তার আম্মা, সুস্থভাবে দায়িত্ব পালন করে সকলকে সঠিকভাবে পরিচালনা করেছেন, যার ফলে তার একমাত্র ছোট বোন স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছে ও ছোট ভাইটাও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সকল সময় অনুপ্রেরণা দেওয়া, ছোটবেলায় পরীক্ষার সময় সব সময় তার সাথে রাত জেগে থাকা এগুলো ছিল নিত্য মনিটরিং এবং ডিউটি। তার বাবা মহসিন জুট মিলের মান নিয়ন্ত্রণ অফিসার। বাবার সারা জীবন সৎ থাকা, আদর্শ মানুষ হওয়ার শিক্ষা তার জীবনের অনুপ্রেরণা। এছাড়া তার প্রিয় ও অনুকরণীয় মানুষ ছিল স্যার ফজলে হাসান আবেদ, ভালো লাগতো তার মানুষের জন্য দেশের জন্য করা ভালো কাজের উদ্যোগগুলো। তিনিও চান নিজে সুখী ও আলোকিত মানুষ হতে এবং আলোকিত মানুষ তৈরি করতে, সর্বদা ভালো কাজের সাথে থাকতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *