আমাদের মানবতা কোথায়….!

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল: রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মাছ বিতরন করছেন কিছু আইরিশ। মানবতার সু-উচ্চ স্থানের এ সব মানুষগুলোর জন্যই পৃথিবী এখনো টিকে আছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দূর্যোগ আসে- কিছু মজুতদার ও অধিক মুনাফালোভী কৃত্তিম সংকট সৃস্টিকারী ব্যাবসায়ীদের জন্য। সাথে আমাদের মনুষ্য সৃস্টি সমস্যাও অনেকটা দায়ী।
লন্ডনে যে হালাল মুরগী ব্রিটিশ শপগুলোয় ৫-৬ পাউন্ড, সেখানে এশিয়ান দোকানগুলোয় ১২ থেকে ১৮ পাউন্ড। এর ছাঁয়া পরেছে আয়ারল্যান্ডের এশিয়ান শপগুলোতেও। প্রায় প্রতিটি দূর্যোগেই এ সব ব্যাবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় নানান অজুহাত দেন। দোষটা অবশ্য পুরোপুরি তাদেরও না। এর মাঝে কাজ করে বিশাল এক সিন্ডিকেট। যার শুরুটা হয় বাংলাদেশ থেকেই। বাংলাদেশে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী বিভিন্ন দূর্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মজুদ করে কৃত্তিম সংকট সৃস্টি করে ইউরোপ আমেরিকার বাজারের উপর শকুন দৃস্টি ফেলে।
বাংলাদেশ হয়ে লন্ডন যখন পন্যগুলো আসে, এখানের ব্যাবসায়ীরা আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে স্থানীয় দোকানগুলোতে বিক্রি করে। এরপরে এখান থেকে ইউরোপের যে কয়টি দেশে আসে মূল্য বাড়িয়ে দেয় আরেক ধাপ। এরপরে এ সব দেশের ব্যাবসায়ীরাও আরেক ধাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই যে কোন দূর্যোগই এশিয়ানদের জন্য অভিশাপ হয়ে আসে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে আয়ারল্যান্ডে বেশ কয়েকটি-প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে খাবার বাসায় পৌছে দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতের কর্মী থেকে শুরু করে বয়স্কদের সুবিধার জন্য নিয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ। আর সেখানে এশিয়া ঘরানার বেশ কিছু ব্যাবসায়ীদের দ্রব্যমূল্যের গতি বাড়ানোকে নিয়েছেন নেতিবাচক ভাবে।
এক জীবনে আপনার প্রাপ্তির খাতা শূন্য থাকলেও মানবতাবোধের সুখকর জায়গা গুলো জিইয়ে রাখা উচিত জনকল্যানে। যাতে করে মৃত্যুর পরও আপনার কর্মে সাধারন মানুষ উপকৃত হয়ে আপনার ত্যাগের উপর শ্রদ্ধার সবটুকু জানালা খুলে দেয়। ইউরোপের প্রায় সবগুলো শপিং সেন্টারগুলোতে মনিটরিং ব্যাবস্থা বেশ শক্তিশালী। ভোক্তা অধিকার আইনের প্রতিটি জায়গায় তারা কাজ করেন অতি সতর্ক ও গুরত্বের সাথে। আয়ারল্যান্ডে গত দশ বছরে পিঁয়াজের দাম ৫৯ সেন্ট,মাঝে মাঝে ছাড় দিয়ে ৩৯-৪৯ সেন্ট।
যা বাংলাদেশী টাকায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এ দশ বছরে তারা দাম কিন্তু কখনে বাড়ায়নি। কিন্তু এশীয় বাজারে নিত্য প্রয়েজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বেশ কয়বার। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ যখন মৃত্যু ভয়ে করেনার ভয়ে, তখন কিছু ব্যাবসায়ী করোনাকে পূঁজি করে করে ব্যাবসা- সন্দেহ জাগ্রত করে তোলে সুস্থ মানসিকতা নিয়ে। ইতিমধ্যে করোনার ভয়াল থাবার আগেই বাংলাদেশের বাজারে চালের দাম বাড়া শুরু হয়ে গেছে। সামনে রমজান মাস, এর আগেই আরো এক ধাপ দাম বাড়ার শংকায় ভুগছেন ক্রেতারা। আমাদের মুসলিম ধর্মে ব্যাবসা সুন্নত করা হয়েছে, যেহেতু আমাদের নবী ব্যাবসা করতেন। কিন্তু আমাদের নবী কখনো খাদ্য মজুদ করে কৃত্তিম শংকট সৃস্টি করে জন দূর্ভোগ সৃস্টি করেননি। আমাদের নবীর ব্যাবসার লক্ষ্য ছিল সেবা করার। যতদিন সেই সেবাটা আমরা না দিতে পারবো, ততদিন ইহকাল ও পরকাল নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। হয়তো আপনার ভল্টে টাকার অভাব থাকবেনা, কিন্তু সুখ,শান্তি প্রবেশের যে দরজাগুলো, সে দরজা গুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে দূর্যোগে মানুষের দূর্ভোগে অংশীদারের দ্বায়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *