সাংবাদিক নির্যাতন করায় আ’লীগ নেতার ছেলে ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

Spread the love

ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় সাংবাদিক সাগর চৌধুরীকে নির্যাতন ও এই নির্যাতনের ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা নাবিল হায়দারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় বড়মানিকা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের ছেলে। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বোরহানউদ্দিনের উপজেলা সড়ক এলাকার বাসা থেকে নাবিলকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার নাবিলের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক সাগর চৌধুরী। তিনি স্থানীয় একটি অনলাউন পোর্টালের প্রকাশক-সম্পাদক।
নাবিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষাার্থী। তিনি এসএম হলের আবাসিক ছাত্র এবং ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক জানান, সাগর চৌধুরী বাদী হয়ে তাকে নির্যাতনের ঘটনায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টায় নাবিল হায়দারকে এক নম্বর এবং অজ্ঞাত পাঁচ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
বড়মানিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বিরুেেদ্ধ জেলেদের জন্য বরাদ্ধের চাল চুরির অভিযোগ করায় সাংবাদিক সাগর চৌধুরীর ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে নাবিল হায়দারের বিরুদ্ধে। ওই সাংবাদিককে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী অপবাদ দিয়ে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকালে উপজেলা সদরের রাজমনি সিনেমা হলের সামনে পেটানো হয়। পরে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর ওই সাংবাদিকের বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
হামলার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মঙ্গলবার বিকাল থেকে বারবার ফোন করেও নাবিল ও তার বাবার কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নাবিলের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন,’সাংবাদিক নির্যাতন খুবই দুঃখজনক ঘটনা৷ এজন্য তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থান নেওয়া হোক৷’
তিনি আরও বলেন, ‘নাবিলের বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে যেটা করেছে সেটা ছাত্রলীগের নীতিবিরোধী, গঠনতন্ত্রবিরোধী। আমাদের দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করেছে সে। আমরা চাই প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী এর বিরুদ্ধে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।’
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক বলেন, এই নাবিল তাকে হুমকি দিয়েছিল।
বোরহানউদ্দিন পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি খুব বিব্রতকর। মঙ্গলবার সাগর থানায় বসে আমাকে ঘটনাটি জানালে আমি তাকে পরামর্শ দেই বিষয়টি সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ও নাবিলের বাবা জসিম উদ্দিন হায়দারকে জানানোর জন্য। এ ঘটনার তদন্তকরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
এদিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির গাজী জানান, ‘বড়মানিকা ইউনিয়নে জেলেদের চাল কম দেওয়া হচ্ছে, এরকম অভিযোগে জেলেদের বক্তব্যসহ একটি ভিডিও সোমবার সাগর আমাকে দেখায়। আমি তখনই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবকে ফোন করে জানতে চাই। এঘটনায় সাংবাদিককে মারধর, নির্যাতন এটা ঠিক নয়, অন্যায়। এর বিচার প্রত্যাশা করি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *