সৈয়দ জুয়েল: করোনা নামের এ সুপ্ত প্রানঘাতি ভাইরাসটি পৃথিবীর মানব জাতির উপর এতটা নির্দয় হবে-তা কোন দেশই বুঝে উঠতে পারেনি,আর তাই স্বাভাবিকভাবেই এর প্রস্তুতিও ছিলনা। তথ্য প্রযুক্তির আধুনিকায়নে যে কোন ঘূর্নিঝড়,জলোচ্ছাসের পূর্বাভাস আমরা আগে থেকেই পেয়ে থাকি,এতে দূর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের সাবধানতা, সচেতনতার সময় থাকে বেশ। যার সুফল পাচ্ছি বেশ অনেক বছর থেকেই।
এ জাতীয় দূর্যোগে অনেক মৃত্যু রোধ সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ জাতীয় অপ্রত্যাশিত ভাইরাসের আগমনে অসহায়ের করুন আর্তনাদের অনিশ্চিত এক বাহনের সওয়ারী এখন আমরা সবাই। পৃথিবীর ক্ষমতাধর রাস্ট্রগুলোতেও এখন মৃত্যুর মিছিল। এ থেকে পরিত্রানের নানান উপায় খুঁজতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিজ্ঞানের নুতন কোন উদ্ভাবনে। এখন পর্যন্ত এর কোন প্রতিশোধক না আসায় ক্রমশঃ জটিল হচ্ছে এ থেকে উত্তরনের। তবে অনেক মৃত্যু হ্রাস সম্ভবে প্রধান কাজটিই হলো- সচেতনতা। এর বিকল্প আর কিছুতে নেই।
বাংলাদেশ পৃথিবীর ছোট এক ঘনবসতি দেশ।এখনও আমরা যুদ্ধ করছি মধ্য আয়ের দেশে নাম লেখাতে। আমাদের সাধ অনেক থাকলেও সাধ্যের অভাবে থমকে যায় অনেক পরিকল্পনা। এর মাঝে সিস্টেম লস তো মরার উপরে খরার ঘা। মানুষকে ঘরে রাখতে সরকারী সহযোগিতা থেকে এগিয়ে এসেছে বেসরকারী সংস্থার ব্যাক্তি বর্গরাও। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসনের প্রতিটি পর্যায়ের সদস্যরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন মানুষকে ঘরে থাকতে।
কিন্তু এরপরও ঘর থেকে বের হচ্ছেন প্রয়োজনে অথবা অপ্রোয়জনে। ঘনবসতি দেশগুলোতে অতিরিক্ত সতর্কতার সাথে না থাকলে তার পরিনামে যে লম্বা লাশের সাঁড়ি আমাদের জন্য তৈরী হচ্ছে-তা দেখার জন্য আমাদের অন্তর চক্ষুর দূরবীন কতটা তৈরী? সময় এসেছে বাড়তি সচেতনতার। পরিবারের প্রতিটি সদস্যই আমাদের জীবন চলার পথের এক একটি নক্ষত্র। অকাল কোন অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর কোন অশুভ ছাঁয়ায় সেই নক্ষত্র যেন অকালে খসে না পরে। তাদের সুরক্ষায় ঘরে থাকি আমাদের ভালবাসার পরিবারের চার দেয়ালের মাঝে,যে দেয়ালটার ভিতর খেলা করে শিশুকাল,যৌবনকাল আর বৃদ্ধকালের সংমিশ্রনের এক অপরুপ জোছনা। এ দূর্যোগ কাটিয়ে সবাইকে নিয়েই যেন আমরা দেখতে পারি- নুতন এক পরিপূর্ন জোছনার। যে জোছনায় খেলা করবে আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের হাসি, আনন্দ আর খুনসুটির প্রতিটি রং। এরকম আকাশ ভরা জোছনা দেখার অপেক্ষায় আমরা সবাই।
২০২০-০৪-১০