ফেসবুকে মাস্তানী ও অপপ্রচার

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল: আধুনিক বিশ্বে নুতন নুতন প্রযুক্তি জোগ হয়ে জীবন যাত্রার রুপকে বদলে দিয়েছে বহুগুন। নিয়ে আসছে নানা বৈচিত্র। হাতের মুঠোয় এখন পৃথিবীর সহজ ও এলোমেলো পথ। প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাবহার করে পৃথিবীর বড় একটা অংশ এর অপব্যাবহারেও লিপ্ত। তথ্য প্রমানাদি ছারা না বুঝে স্টাটাস অথবা দূর্বল সমালোচনা করা অনেকটা অভ্যাসে দাড়িয়ে গেছে। একটা স্টাটাস দিয়েই রাজ্য জয়ের বিকৃত হাসিতেই তারা তৃপ্ত। সামনে থেকে কোন দূর্যোগে নেতৃত্ব দিতে না দেখলেও সমালোচনায় পারদর্শী এসব ফেসবুকি মাস্তানদের দৌরাত্বে অনেক সচেতন নাগরিকই এখন ফেসবুকে আাসাও কমিয়ে দিয়েছেন।
বর্তমানে পৃথিবী ব্যাপী করোনার হিংস্র থাবায় যখন প্রতিটি দেশ পর্যুস্ত, ঠিক তখনও এই অসাধু চক্রটির তৎপরতা জাতিকে ভাবিয়ে তোলে, সন্দেহ উঁকি দেয় তার সুনাগরিকের তকমা লাগিয়ে অপরাজনীতি চর্চার তথাকথিত নেতা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকা এ সব স্বল্প শিক্ষার ক্ষুদে ফেসবুক সন্ত্রাসীদের কার্যকলাপে। জাতির যে কোন দূর্যোগে দল মত নির্বিশেষে এক জোগে ঝাপিয়ে পরতে হয়ে এর মোকাবেলা করতে। এটাকেই বলে সুস্থ রাজনীতি। আর বিরোধীতার খাতিরে যদি বিরোধীতা করতে হয়,তাহলে তো সেটা জনগনের জন্য নয়।
অন্ততঃ সচেতন নাগরিকরা রাজনীতির এ খেলাটা এখন ভালই বুঝেন। আগে একটা সময় ছিল জনপ্রতি দশ বিশ টাকা দিলেই ট্রাক ভরে লোক আসতো,ঐ জায়গা থেকে জনগন অনেকটাই বেরিয়ে আসছে। এখন সভা সমাবেশে সাধারন মানুষের আগমন তেমন নেই বললেই চলে। বর্তমানে দল থেকে সুবিধা নেয়ার নেতা কর্মীরাই শুধু মাঠ গরম করেন। আর তাই রাজনীতির মাঠটা সাধারনের পদচারনায় ততটা সরব নয়। দেশের বদনাম হয় এমন প্রচারনা বন্ধ না হলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে পরবে। আজ যারা বিরোধী দলগুলোতে আছেন,তারাও একসময় সরকারে আসবেন,তখনও বিরোধী দলে যারা থাকবেন-এই একই কাজ করবেন। একটি দেশ এগিয়ে গেলে তার সুফল দেশের প্রতিটি নাগরিক যেমন পায়,ঠিক তেমনি দেশটির পিছনে ব্যার্থতার তকমা লেগে গেলে তার ভাগীদারও হন নাগরিকরা।
আম জনতা রাজনীতির জাঁতাকলের হিংস্রতার কুফলের দায়ভার কেন নিবেন? গনতান্ত্রিক শাসন ব্যাবস্থায় একজন নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়া রাস্ট্রের দায়িত্ব,আর তাই সসময় এসেছে এ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর। আর কত প্রজন্ম এই একে অপরের কুৎসা শুনার জন্য বিরক্ত হবে প্রতিনিয়ত। জাতি এ রাজনীতির ধারা দেখে আজ ক্লান্ত। বিশেষ করে বর্তমানে ফেসবুকে সত্যের চেয়ে ভূল তথ্যে বিভ্রান্তে হচ্ছে সাধারন নাগরিকরা। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাই প্রেসার ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা। অনেক নেতিবাচক,বিভৎস পোস্ট দেখে তাদের সুগার লেভেল ও রক্তচাপের গতি বেড়ে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে।।দ্রুত সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুক সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় এ প্রতিরোধে এক বিশেষ আইন জরুরী হয়ে পরছে।
জনগনের নিরাপত্তায় এট এখন সময়ের দাবী। হয়তো বিরোধী দলগুলো এতে এগিয়ে আসবেনা,তবে রাজনৈতিক দলের সদস্যদের তুলনায় সাধারন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশী। তাই সাধারনের মতামত সরকারকে অতি গুরত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। তবে একসময় বর্তমান বিরোধী দলগুলো ক্ষমতায় আসলে এর সুফল তারাও ভোগ করবেন। আমরা চাই আলোকিত সুস্থ এক সমাজ ব্যাবস্থা।
যে ব্যাবস্থায় থাকবে জনগনের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের পরিপূর্ন এক নিশুতি আলো। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ঐ নিশুতি আলোয় বসে যেন তাদের পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া নিরাপদ সমাজ ব্যাবস্থার কথা ভেবে গর্ব করে বলতে পারে- সভ্য এক জাতি গঠনে তোমাদের যে ত্যাগ,সেই ত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে আজ আমরা। স্যালুট তোমাদের। কতদিনই আর বাঁচবো আমরা! রেখে যাইনা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য যৌবনা দুপুরের ঝকঝকে রোদ। অন্ততঃ মৃত্যুর পরে আমাদের সন্তানেরা শ্রদ্ধায় হাসনা হেনা অথবা কাঁঠাল চাঁপার দুটো বৃক্ষরোপন করে অপেক্ষায় থাকবে- তার সৌরভের। যে সৌরভের বীজ রোপন করেছিলো তাদেরই পূর্বশরীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *