সাইপ্রাসে পর্যটনশীল্পে ধস, ঘুরে দাড়ানোর প্রত্যয়

Spread the love

মোস্তাইন বিল্লাহ, সাইপ্রাস থেকে: দশ হাজার বছরের ইতিহাস আর সভ্যতায় মোড়ানো পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অববাহিকায় একটি সমৃদ্ধশালী এবং বৈচিত্রময় প্রকৃতির দ্বীপ রাষ্ট্র সাইপ্রাস। এখানে করোনার তান্ডবে চলতি বছরে পর্যটনখাতে দেড় বিলিয়ন ইউরো ক্ষতির সম্ভাবনা। তবে করোনাভাইরাস যথেস্ট নিয়ন্ত্রণে থাকায় কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সাইপ্রাসের পর্যটনখাতের প্রতিমন্ত্রী মনে করেন যে, আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী জুলাই মাসে সীমিত সংখ্যক পর্যটক দিয়ে আমরা শুরু করতে পারি। তাতে ঘুরে দাড়াতে পারে এ শিল্প।
পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় এ খাতটিকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার লক্ষে , উপ-মন্ত্রণালয় স্বল্প ও মধ্যমেয়াাদী উভয় ক্ষেত্রেই এই খাতকে প্রস্তুত করতে সহায়তা করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। স্থানীয় পর্যটনকে উৎসাহিত করতে ছুটির প্যাকেজ প্রস্তুত করে ইতোমধ্যে এটি নির্বাচিত দেশগুলিতে প্রচার শুরু করেছে।
পর্যটনমন্ত্রী সাভাস পেরদিওস মনে করছেন, যে সাইপ্রাসের অর্থনীতির পর্যটন আয়ের দেড় বিলিয়ন ইউরো ক্ষতির কারণ হলো, সমস্ত বুকিংয়ের ষাট শতাংশ বাতিল হয়ে যাবে। তবে আমরা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জানতে পারব যখন ব্রিটেন এবং রাশিয়া থেকে সাইপ্রাসে পর্যটকরা আশা শুরু করবে কারণ এ সকল রাস্ট্র থেকে সর্বাধিক পর্যটক আসে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, গ্রীস, ইসরাইল এবং নেদারল্যান্ডসের ট্রাভেল এজেন্টদের সাইপ্রাস সম্পর্কে ইতিবাচক ধারনা রয়েছে এবং তিনি আরো মনে করেন, এয়ারলাইনসগুলো জুলাইয়ের মধ্য সময়ে আকর্ষণীয় অফার সরবরাহ করবে। এজন্য আমরা হারমাস বিমানবন্দর, পরিবহন মন্ত্রনালয় এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের সাথে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ করছি।”
করোনাভাইরাস সংকটে ক্ষতিগ্রস্থ পর্যটন হোল্ডারদের আরও সুবিধা দেওয়া হবে,তার জন্য একটি বিল তৈরি করা হচ্ছে যা হোটেলবাসী এবং ট্যুর অপারেটররা তাদের ক্লায়েন্টদের সরকার সমর্থিত ভাউচার দেওয়ার সুযোগ দেবে যারা তাদের সাইপ্রাস ভ্রমণ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল।
সাইপ্রেিসর ট্র্যাভেল এজেন্টরাও যথেস্ট আশাবাদী কারণ বেশিরভাগ বুকিং এখনও বাতিল হয়নি।এবং সাইপ্রাস ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এসিটিএ) এই বুকিংগুলি যেন বাতিল না হয় সেজন্য সাধ্যমত চেষ্টা করছে।
ফিনান্সিয়াল মিররটির সাথে আলাপকালে, আইসিটিএর চেয়ারম্যান ভ্যাসিলিস স্টামতারিস বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকের বুকিং বাতিল করা ট্যুর অপারেটর এবং অন্যান্যদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। স্টামাতারিস বলেছেন যে গ্রীসের প্রতি জোর দেওয়া হচ্ছে, কারণ দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি স্তরের নৈকট্য এবং সম্পর্ক উভয় পথেই পর্যটকদের প্রবাহকে সহজতর করবে।
স্ট্যামতারিস বলেছেন, গ্রিসে ভাইরাসের প্রভাব সাইপ্রাসের মত একই স্তরে এবং আমরা উভয়ে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। ফিনান্সিয়াল মিররকে দেওয়া মন্তব্যে, সাইপ্রাস ট্যুরিস্ট এন্টারপ্রাইজস (এসিটিই) এর বিশেষ উপদেষ্টা অ্যাঞ্জেলস লোইজউ বলেছেন যে হোটেল ব্যবসায়ীরা এই সংকট কাটিয়ে নতুন করে তাদের কার্যক্রম শুরু করার জন্য বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
অ্যাঞ্জেলস লইজউ আরো বলেছেন যে, ইতিমধ্যে যে সকল হোটেলব্যবসায়ী তাদের হোটেল খোলার সিদ্ধান্ত নেবেন তারা স্থানীয় পর্যটকদের আকর্ষন করতে পারবেন, কারণ এখানে প্রচুর সংখ্যক সাইপ্রিয়ট পর্যটক আছে। আর এটি তাদের দুটি উপায়ে উপকৃত করবে। একটি তারা তাদের ব্যবসা কিছুটা চালিয়ে যেতে সক্ষম হবে এবং দ্বিতীয়ত, তারা কীভাবে তাদের হোটেলগুলি নতুন এ পরিস্থিতির মধ্যে সঠিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সক্ষম সেটা জানার সুযোগ পাবে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সাইপ্রাসে মোট পর্যটকের রেকর্ড ছিল ৩৯,৭৬,৭৭৭ জন। এবং মোট আয় ছিল ২.৭১ বিলিয়ন ইউরো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *