দুর্নীতির আখড়া বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান নুরে আলমের

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: জনপ্রতিনিধি হয়ে দুর্নীতির ব্যবসা কেন্দ্রে পরিনত করেছেলিনে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় একজন বরখাস্ত হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান। জনগনের খাদ্য সহায়তা আতœসাত, বালু উত্তোলন করে নদী ভাঙ্গনের সৃস্টি এমনকি অবৈধভাবে ইটভাটা করে ভয়াবহ পরিবেশ দুষনও করেছিলেন। জনগনের ভোটে জনপ্রতিনধি হয়ে এমন দুর্নীতি পরায়ন হয়ে ওঠা ব্যক্তি হলেন উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নূরে আলম বেপারী। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় প্রশানকে ম্যানেজ করে এলাকায় গড়ে তুলেছিলেন পারিবারিক রাজত্ব। র‌্যাব বিপুল পরিমাল চাল উদ্ধার করায় বর্তমানে পলাতক রয়েছেন দুর্নীতিবাজ এ চেয়ারম্যান। যদিও এলাকাবাসী চেয়ারম্যান নুরে আলমের ফিরে আশার গুঞ্জনে শংকিত।
জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল র‌্যাব-৮ বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নূরে আলম বেপারীর নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৮৪ বস্তা সরকারী চাল উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় গত ২৩ এপ্রিল তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবয় মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল জেলার ২নং কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নূরে আলম বেপারী জাটকা নিধনে বিরত থাকা জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ১৮৪ বস্তা সরকারী চাল আতœসাত পূর্বক কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিজ বাড়িতে মজুদ করায় তাকে বরখাস্ত করা হয়।
সেই চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারীর বিরুদ্ধে এবার উঠেছে ভিজিডি চাল আত্মসাতের অভিযোগ। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউনিয়নের বিজিডি বঞ্চিতরা। গত ২৭ এপ্রিল ১৪ নারীর স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রটি অনলাইনের মাধ্যমে দাখিল করা হয়েছে। জেলা প্রশাসককে দেয়া অভিযোগের অনুলিপি দেয়া হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বরিশাল জেলার সমন্বয়ক আব্দুল হালিম, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, দুদক পরিচালক, র‌্যাব-৮ এর অধিনায়কসহ সংশ্লিস্টদের।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়- চেয়ারম্যান নূরে আলম চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৪ মাসের বিজিডি ডিও উত্তোলন করেছেন। যা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার, ইউপি সচিব, গোডাউন কর্মকর্তা অবগত। ৪ মাসের চাল উত্তোলন করা হলেও চেয়ারম্যান তাদের মাঝে মাত্র দুই মাসের চাল বিতরণ করেছেন। বাকি দুই মাসের চাল চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, জনগনের এই খাদ্য সহায়তা আতœসাতসহ নানা অপকর্মে তার দুই ভাই জড়িত। র‌্যাবের দায়ের করা মামলায়ও নুরে আলমের ২ ভাইকে আসামী করা হয়েছে। জানতে চাইলে কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইদ্রিস কবিরাজ বলেন, চাল চোর চেয়ারম্যান নূরে আলম বরখাস্ত হওয়ায় জনগন সস্তির পাশাপাশি শংকিতও। কেন না রাতের আধারে চেয়ারম্যান নুরে আলম তার ২ ভাইকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশেই জনগণকে ঠকিয়ে খাদ্য সহায়ত কম দেয়া হত।
কেদারপুরের একাধিক জনপ্রতিনিধি বলেন, চেয়ারম্যান নুরে আলম এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে, ইটভাটা পরিচালনা করে আসছে।। সন্ধ্যা, সুগন্ধ্যা, আড়িয়াল খা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টিন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গির হাই স্কুল ও কলেজ ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়ে। নদী ভাঙ্গনে বহু মানুষ ভিটেহারা হয়ে পড়েছে। এমনকি তার একটি অবৈধ ইটের ভাটা পরিবেশ দুষন ঘটাচ্ছে।
বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী এমদাদুল হক দুলাল বলেন, কেদারপুরের চেয়ারম্যান নুরে আলম উপজেলা আলীগের সদস্য হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপাশি করেছেন।
এব্যপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিৎ হাওলাদার বলেন, চাল আতœসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান নুরে আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা ও বালু কেটে নদীভাঙ্গন সৃস্টি প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বালুমহলের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট চলমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *