প্রবীনদের হাসি ও আমাদের পূর্নতা

Spread the love

সৈয়দ জুয়েল: করোনায় মৃত্যুে মিছিলে পুরো পৃথিবীই এখন লন্ডভন্ড। পরিসংখ্যানে ষাটোর্ধ লোকদের মৃতের হার সবচেয়ে বেশী। মহামারির এ যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকের ন্যায় নিশ্চুপ করুন দীর্ঘশ্বােেস চারদেয়ালের ভিতরই কাটছে আমাদের ভালবাসার প্রবীনদের। যে মানুষগুলি নিশূতি রাতে আমাদের কান্নার শব্দ শুনে বুকের উষ্ণতায় আগলে রেখে পায়চারী করে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন, আজ বয়সের ভারে অবাক নয়নে নিস্পলক নিরাপত্তাহীনতার আর্তনাদ তাড়িয়ে বেড়ায় অহর্নিশ।
কয়টি বছর আগেও আমরা যখন শিশু ছিলাম, তারা নবীন। যাদের হাতের উপর পা দিয়ে আমরা হাঁটতে শিখেছি, কাটতে শিখেছি, রাতে ঘুমোতাম যাদের বুকের ভিতরে, স্বপ্নে ভয় পেয়ে যাদের আঁকড়ে ধরতাম প্রতিনিয়ত। আজ সেই ভালবাসার সাহসী ত্যাগী নবীনরাই প্রবীন। সময় এসেছে প্রবীনদের জন্য কিছুটা ঋন শোধে। করোনায় তাদের পাশে থেকে শক্তি আর সাহসের পাশাপাশি ভালবেসে একটু যতœ। একটু মুখে খাবার তুলে দেয়া, একটু ভালবাসি বলে জড়িয়ে ধরা। খুব বেশী কি?
শিশু থাকাকালীন সময় আমাদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য পিছু পিছু দৌড়ানো,আর হাজার চুমো আর ভালবাসি বলেও তো কখনো তারা বিরক্ত হননি। বলুন তো শেষ কতদিন আগে আমাদের বাবা,মা কে বলেছি- ভালবাসি তোমায়! কতদিন তাদের বুকে মাথা রেখে আদর করেছি! কতদিন আগে শেষ খাবার মুখে তুলে দিয়েছি! সারাটি জীবন যে মানুষগুলো আমাদের জন্য নিজের শরীরের দিকে যতœ নিতে পারেনি,আজ জীবনের শেষ দিনগুলিতে ভালবাসার যতœ তাদের খুবই জরুরী।
করোনায় যে সব মৃত্যু হচ্ছে, তাতে প্রিজনরাও তাদের লাশ দাফনে অনীহা প্রকাশ করে। শেষ বিদায়ে যে করুন চিত্র ফুটে উঠেছে, তাতে কিংকর্তব্যবিমুঢ় পুরো মানব জাতি। আমরা আমাদের প্রবীনদের শেষ বিদায়টা ভালবাসা মিশ্রিত অশ্রæসজল নয়নে দিতে চাই। যাদের নিঃস্বার্থ ভালবাসার ত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে আমরা আজ পূর্নতা পেয়েছি জীবন চলার প্রতিটি বাঁকে, শবযাত্রার মহাপ্রস্থানে অনিশ্চিত অন্ধকারের কুটীরে রেখে আসার সময় শুভ্র কাপড়ে মোড়ানো ভালবাসার মানুষদের মুখের কাপড়টা সরিয়ে কপালে একটু শ্রদ্ধা আর ভালবাসার চুমো দিয়ে মুখটা একটু ছুঁয়ে দিতে চাই।
জীবিত থাকাকালীন এ মুখটাই তো আমাদের দিকে কত আদর মাখায় ভড়িয়ে রাখতো। এ মুখ তো আর খুঁজে ফিরবেনা আমাদের চলার পথের সুখের নিদ্রাযাপনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *