জুতার মালা গলায় ঝুলিয়ে শিক্ষককে বর্বর শাস্তি

Spread the love

নাগরিক রিপোর্ট: বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে মাওলানা আলাউদ্দিন ব্যাপারী নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে জুতার মালা গলায় ঝুলিয়ে চরম নাজেহাল করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ২জন সদস্য ও ৪ জন সালিশদার। উপ বৃত্তির টাকা আতœসাতের অভিযোগে বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে এমন বর্র্বর বিচার করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী। শিক্ষক আলাউদ্দিন পার্শবর্তী একটি মসজিদের ইমামও। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যান মোস্তফাসহ সালিশদাররা ওই শিক্ষককে নাজেহালের পাশাপাশি নির্যাতনও করেছেন।
বুধবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়- মাদ্রাসা শিক্ষক আলাউদ্দিনের গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে দিয়ে চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী শাসাচ্ছেন। এসময় চেয়ারম্যান ধুমপান করছিলেন। একই সময়ে অভিযোগকারী ইউপি সদস্য ছত্তার শিক্ষকের কাছে গিয়ে তার মাথার টুপি খুলে নিয়ে যান। ইউনিয়ন পরিষদের চারদিকে সাধারন মানুষের জটলা দেখা গেছে। এসময় নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষককে বিমর্ষ দেখা গেছে।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিযুষ চন্দ্র দে এ তথ্যর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একজন শিক্ষককে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের এধরনের শাস্তি দেয়ার কোন অধিকার নেই। এটা অগ্রহনযোগ্য। ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে দড়ির চর খাজুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী জানান, আলাউদ্দিন দড়িরর চর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক। তিনি পার্শবর্তী একটি মসজিদের ইমাম। শিক্ষক আলাউদ্দিন সম্প্রতি ওই মাদ্রাসার ২ ছাত্রীর উপ বৃত্তির টাকা আতœসাত করেছেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর খালু ছত্তার সিকদার ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি(চেয়ারম্যান) সহ ২জন ইউপি সদস্য শহিদ ও ফিরোজ এবং স্থানীয় ৪জন গন্যমান্য ব্যক্তি বুধবার দুপুরে সালিশে বসেন। সেখানে সালিশদাররা বিচারে রায় দেন যে শিক্ষক আলাউদ্দিন উপ বৃত্তির ৪ হাজার ৮শ টাকা ফেরত দিবে নতুবা জুতার মালা পড়বে। এ অবস্থায় ওই শিক্ষকই সেচ্ছায় জুতার মালা পড়তে রাজি হন। পরে সকলের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদে জুতার মালা পড়িয়ে শিক্ষককে ঘুরানো হয়।
তবে মাদ্রাসা শিক্ষক আলাউদ্দিন ব্যাপারী সাংবাদিকদের জানান, তার মাদ্রাসার ২ শিক্ষার্থীর মোবাইল না থাকায় তার মোবাইলে উপ বৃত্তির টাকা আসে। ওই টাকা নিয়ে এর আগেও একবার অভিযোগকারী সাবেক ইউপি সদস্য ও সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আ: ছত্তার তাকে নাজেহাল করেছে। বুধবার প্রকাশ্যে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে জুতার মালা পড়িয়ে দেয়া হয়। তিনি এ ঘটনার পর লোকলজ্জায় ঘর থেকে বেড় হতে পাড়ছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *